অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল। ‘ন ডরাই’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। আর প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন তিনি। রুপালি জগতে পা রেখেই সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
গত ২৯ মে দিবাগত রাতে চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কিছু ‘আপত্তিকর’ ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবি ও ভিডিওতে মদ্যপ অবস্থায় দেখা গেছে অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষিকে। তারপর থেকে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে নেটদুনিয়ায়, দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েছেন এই অভিনেত্রী। বিশেষ করে ভিডিওতে সুনেরাহর বলা কয়েকটি ‘অশ্লীল’ শব্দ তাকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর পরই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সুনেরাহ বিনতে কামাল। এ অভিনেত্রী লিখেন, ‘রাজকে আমি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জানি এবং সে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমরা সবাই জানি কীভাবে আমরা বেস্ট ফ্রেন্ডদের সঙ্গে কথা বলি। আপনাদের কাছে সমস্যা হলো, সে (রাজ) একজন ছেলে আর আমি মেয়ে।’
রাজের স্ত্রী চিত্রনায়িকা পরীমণির নাম উল্লেখ না করে সুনেরাহ বিনতে কামাল লিখেন, ‘বিয়ের পর রাজের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই বললেই চলে। সেদিন ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল একটি ডাবিং স্টুডিওতে; আমরা একটি ছবি তুলি। আমি জানি না পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তোলায় কী ভুল ছিল? তার স্ত্রী ছবিটি দেখে আমার ওপর কোনো কারণ ছাড়াই রেগে গিয়েছেন।’
ফাঁস হওয়া ভিডিও নিয়ে সুনেরাহর ব্যাখ্যা, ‘যে ভিডিও ক্লিপগুলো আপনারা দেখেছেন, সেগুলো পাঁচ বছর আগের। আমাদের বয়স কম ছিল। আমরা সেভাবেই কথা বলার চেষ্টা করছিলাম, যেভাবে ‘ন ডরাই’র জন্য প্রতিদিন অনুশীলন করতাম। কারণ, আমরা (বিশেষ করে আমি) সিনেমায় এসব গালি ব্যবহার করেছি। আরেকটি ফটো আমি তাকে পাঠিয়েছিলাম শুটিংয়ের প্রয়োজনে মার খেয়ে ব্যথা পেয়েছিলাম, সেটা দেখানোর জন্য যে (ছবিতে লিয়াকত আমাকে মারতেন, যারা ‘ন ডরাই’ দেখেছেন তারা জানেন) আঘাতের কারণে শুটিংয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই বোঝাতে। এই ছবি আমি শুধু তাকে পাঠাইনি, নির্মাতাকেও দিয়েছি।’
পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন সুনেরাহ। তার ভাষায়— ‘বিষয়টিকে বড় করে দেখবেন না অনুগ্রহ করে। কারণ আইডি হ্যাক হয়েছিল এটা নিশ্চিত। আর আমরা সবাই জানি কে করেছেন। জনসমক্ষে হইচই করতে যার কোনো কারণ লাগে না! যারা এগুলো ছড়িয়ে আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।’
ভিডিও ফাঁস হওয়ার দু’দিন পর শরীফুল রাজ তার অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিন বান্ধবীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ-ও জানান, তার আইডি হ্যাক হয়নি। অন্যদিকে, তানজিন তিশা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। যার জন্য বিষয়টি তিনি জানতেন। তবে বুধবার (৩১ মে) দিবাগত রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।
যে যার অবস্থান থেকে নিজেদের বক্তব্য জনসম্মুখে তুলে ধরলেও একটু বেশি সমালোচিত হচ্ছেন সুনেরাহ। তার বলা ‘অশ্লীল’ শব্দ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকে তার রুচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সুনেরাহ পড়াশোনা করেছেন রাজধানী উত্তরার স্কলাসটিকা স্কুলে। স্কুলজীবনেই বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী ছিলেন। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় র্যাম্পের মাধ্যমে ফ্যাশন মডেলিংয়ে পথচলা শুরু করেন। এরপর কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে।
২০১৮ সালে প্রীতমের ‘রাজকুমার’ মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের সুবাদে পরিচালক তানিম রহমান অংশু তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে ‘ন ডরাই’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনেত্রী পরিচয়ে চলচ্চিত্র জগতে আবির্ভাব তার। চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর থেকেই সুনেরাহ নতুন করে আলোচনায় আসেন, সবখানেই প্রশংসিত হয় তার অভিনয়।