ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ভারতীয় বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি যেমন শাসন করেছেন, তেমনি বলিউডেও নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
মিঠুন-যোগিতা বালি দম্পতির তিন ছেলে। দিশানি চক্রবর্তী তাদের দত্তক কন্যা। জানা যায়, কলকাতার এক ডাস্টবিনের পাশে একটি কন্যা শিশু পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। পুলিশ খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। তারপর ওই শিশুকে রাখা হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দায়িত্বে। সেখান থেকেই দত্তক নেন মিঠুন-যোগিতা।
সেই দিশানি চক্রবর্তী এখন আর ছোট নেই। বাবার পথ ধরে অভিনয়ে নাম লেখিয়েছেন মিঠুনের পালক মেয়ে দিশানি। ক্যারিয়ার শুরুর আগে নিজেকে তৈরি করতে পাড়ি জমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। নিউ ইয়র্ক ফিল্ম অ্যাকাডেমিতে অভিনয়ের ওপর স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। আপাতত সেখানেই বসবাস করছেন দিশানি।
নিউ ইয়র্কে প্রথম বর্ষ শেষ করার পর স্থানীয় মঞ্চনাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান দিশানি। অস্কার পুরস্কারপ্রাপ্ত মার্কিন অভিনেতা আল পাচিনো তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ২০২১ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের লি স্ট্র্যাসবার্গ থিয়েটার ইনস্টিটিউটে প্রদর্শিত হয় দিশানির এই নাটক। এটি নির্দেশনা দেন কেমবারলি হ্যারিস।
সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে দিশানি বলেছিলেন— “কিংবদন্তি আল পাচিনো স্যারের সামনে পারফর্ম করার সুযোগ অকল্পনীয়। আমি থিয়েটার ভালোবাসি। শুরুটা অসাধারণ হলো। আশা করি, বাবাকে গর্বিত করতে পারব। প্রতিদিন আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
২০১৭ সালে ‘হোলি স্মোক’ শিরোনামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে হাতেখড়ি হয় দিশানির। তা ছাড়াও ‘আন্ডারপাস’, ‘সুটেবল এশিয়ান ডেটিং উইথ পিএমবি’ নামে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন দিশানি। স্নাতক শেষ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিজ্ঞাপন ও ‘দ্য গেস্ট’ শিরোনামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি নিজেও চিত্রনাট্য রচনা করছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ক্যারিয়ার শুরু করাটা মোটেও সহজ কাজ ছিল না বলে জানান দিশানি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেত্রী বলেছিলেন, “লস অ্যাঞ্জেলেসে ক্যারিয়ার শুরু করা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু আমি যে গল্প বলতে চাই, যে চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, সেসবের প্রতি আবেগ এতটাই যে, আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
বাবা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে দিশানির দারুণ সম্পর্ক। বাবার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। তা জানিয়ে দিশা বলেছিলেন, “বাবার মূল্যবান এত পরামর্শ আমি গ্রহণ করেছি যে, তা দিয়ে একটি বই রচনা করা যাবে।”
কিছুদিন আগে রিয়েলিটি শো ‘ড্যান্স বাংলা ড্যান্স’-এ বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সেখানে মেয়ে দিশানির সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে চাওয়া হয়। দিশানির বিয়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে এ আলাপচারিতায়। মেয়েকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তার গলা ধরে আসে। মিঠুন চক্রবর্তী বলেন— “যেদিন হবে সেদিন আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই মারা যাব।” এরপর মিঠুনের চোখ গড়িয়ে জল ঝরতে থাকে।