রাজনীতি

বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অতীত কর্মকাণ্ডের ফল হিসেবে বিএনপি আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে নয়, নিরপত্তা বেস্টনিতে বসে শুধুমাত্র লিপ সার্ভিসের মাধ্যমে গণমাধ্যমের ওপর ভর করে টিকে আছে।  আসলে বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, নিবেও না।

সোমবার (১৬ আগস্ট) গণমাধ‌্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব‌্য করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব‌্যের প্রতিবাদে এই বিবৃতিটি গণমাধ‌্যমে দেন দিনি।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার, কারও ওপর দমন-পীড়নে বিশ্বাসী নয়।  আওয়ামী লীগ আইনের শাসন ও বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থী বা জননিরাপত্তা ভঙ্গ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একজন ছাত্রদল নেতার জামিন না হওয়ায় নিলর্জ্জভাবে সরকারের সমালোচনা ককরায় মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ‌্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যেকোনো ব্যক্তির জামিন প্রাপ্তি একটি সুনির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া, এটি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। এখানে সরকারকে দোষারোপের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আসলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ধান ভানতে শিবের গীত গাইতে চেয়েছেন।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার দেশকে কখনোই বিএনপি শূন্য করতে চায়নি, এটি আওয়ামী লীগের রাজনীতিও নয়।  বরং বিএনপি নীতিবিবর্জিত হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে বৈধতা দিয়েছে। এমনকি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। অতীত কর্মকাণ্ডের ফল হিসেবে বিএনপি আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে নয়, নিরপত্তা বেষ্টনীতে বসে শুধুমাত্র লিপ সার্ভিসের মাধ্যমে গণমাধ্যমের ওপর ভর করে টিকে আছে। আসলে বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, নিবেও না।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, বাঙালি জাতির জীবনে এক গ্লানিময় অপবিত্র অধ্যায় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দিনে জাতির পিতাকে হত্যার বেনিফিশিয়ারি গ্রুপ এবং খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের প্রতিনিধি হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তথাকথিত ভয় ও আতঙ্কের গল্পের আড়ালে বাঙালির কষ্টার্জিত আইনের শাসনের প্রতি যে রক্তচক্ষু প্রদর্শন করেছেন বাঙালি জাতি তার পরোয়া করে না। ১৫ আগস্টের ইতিহাসের বিয়োগান্তক অধ্যায় থেকে বাঙালি জাতি শিক্ষা গ্রহণ করে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সেনাশাসক জিয়াউর রহমান সেনা আইন ও সংবিধান লংঘন করে সেনা ছাউনিতে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন।  জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলে উন্মত্ত, গণতান্ত্রিক নিয়মনীতি রক্ষা করে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় সর্বদা ব্যর্থ হয়েছে। তাই বিএনপির মিথ্যা-বানোয়াট-ভ্রান্তিমূলক বয়ান বাংলার জনগণ সবসময় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের রাজনীতিতে জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতার সুফল যখন বাংলার জনগণের নিকট পৌঁছে দিচ্ছিলেন তখনই দেশি-বিদেশি চক্র সম্মিলিতভাবে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পাকিস্তানি ভাবাদর্শের আদলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্বৈরশাসক জিয়া ও এরশাদ বাংলাদেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরে খুনি-ঘাতকচক্র তার ও তার পরিবারের সদস্যদের চরিত্র হননের হীন অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তেমনিভাবে আজও একটি চিহ্নিত মতলবি মহল শেখ হাসিনা সরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি শোকের মাস আগস্টে শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।