পাকিস্তানের জেনারেল জিয়াউল হকের মতো জেনারেল জিয়াউর রহমানের লাশও পুড়ে অঙ্গার হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ দাবি করেন তিনি। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জেনারেল এরশাদ বহন করেছেন, সেই কফিনে নাকি জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল। ফখরুল সাহেব এটা প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। ভিতরে কে আছে, সেটা না, কফিনটাই কি প্রমাণ যে, ভিতরে জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল?’
‘আমি ফখরুল সাহেবের কাছে দুই বছর ধরে একটাই প্রশ্ন করে আসছি—চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গুনিয়া হয়ে যে লাশ ঢাকায় এলো, এর একটা ছবি দেখান। তাহলে প্রমাণ কীভাবে দেবেন? আপনাদের তো যুক্তি নেই। এ কথা বলতে গেলেই তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের মিথ্যাচার করছেন। একটা প্রশ্নরেও সঠিক জবাব তিনি দেননি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গতকালও প্রশ্ন করেছিলাম, সার্কিট হাউজ থেকে লাশটা রাঙ্গুনিয়ায় কে নিলো, বলুন। লাশ কোথায় পাবেন, লাশ তো পুড়িয়ে ফেলেছে। পাকিস্তানে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত জেলারেল জিয়াউল হকের লাশ পুড়িয়ে ফেলেনি, পুড়ে গেছে। বিমান দুর্ঘটনায় আগুন জ্বলেছে দাউদাউ করে। বিমান দুর্ঘটনায় যখন আকাশে আগুন জ্বলে, সেখানে যে মানুষ থাকে, সে তো অঙ্গার হয়ে গেছে। সেখানে ফয়সাল মসজিদের সামনে কফিন রেখে বিশাল জানাজা করা হয়েছে। ওই কফিনেও জিয়াউল হক নেই, এই কফিনেও জিয়াউর রহমান নেই।’
মামলা থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে বেড়ানোদেরও বিএনপি গুমের তালিকায় নিয়ে এসেছে, অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশে তো অনেক গুম হয়েছে। নিজে নিজে গুম হয়ে যায়, নানা কারণে গুম হয়ে যায়। অনেকে মামলা থেকে, খুন-সন্ত্রাস থেকে বাঁচার জন্য নিজে নিজে গুম হয়ে যায়। অনেকে আবার পালিয়ে বিদেশে চলে যায়, হয়তো সাগরেই সমাধি হয়। ইতালি-লিবিয়ায় যায়, প্রত্যেকটার মধ্যেই বাংলাদেশের লোক আছে। সর্বশেষ ইতালিতে ট্রলারে যে ধরা পরেছে, সেখানে বাংলাদেশের লোক আছে। আর ফখরুল সাহেবের গুমের লিস্টে এদের নামও আছে। নানা কারণে পালায়, নানা কারণে আত্মগোপন করে। কিছুদিন পরে আবার ফেরত আসে।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘ক্ষমতা দখলের জন্য পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রপ্রধান হত্যার শিকার হয়েছেন। কোথাও রাষ্ট্রপ্রধানদের পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যা করা হয়নি। নারী-শিশুকে হত্যা করা হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যা শুধু ক্ষমতা দখলের কারণ ছিল না। এ হত্যাকাণ্ড হয়েছিল ১৯৭১ সালে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।’
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ।