বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন দেওয়ার কারণ ছিল। আমাদের দেশের এ সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। সেই অনির্বাচিত সরকারের বেআইনি আদেশ পালন করতে গিয়ে র্যাব বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছিল। স্যাংশন দেওয়ার পরেও র্যাবের ওসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এতে র্যাবের অসাধু কর্মকর্তারা প্রশ্রয় পেয়েছে এবং এখনও একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নওগাঁয় একজন সাধারণ বিধবা নারী, যিনি চাকরি করতেন, অনেক কষ্টে তার সন্তানদের মানুষ করছেন। তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন তারা অস্বীকার করছে। র্যাবের ওপর স্যাংশন দেওয়ার পর আমরা কেউ আনন্দিত হইনি, বরং লজ্জিত হয়েছিলাম। স্যাংশন দিয়ে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছিল।
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সরকার দেশের মানুষকে হত্যা-নির্যাতন-গুম-খুনের মাধ্যমে দমন করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে, মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার অনির্বাচিত সরকার, জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজারও নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা দল-মত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এরইমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ভয়াবহ দানবীয় এ সরকার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হবে। যে আন্দোলন আমরা শুরু করেছি, তাতে অংশ নিয়ে মাঠে নেমে এ পর্যন্ত ১৭ জন নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবুও আমাদের ভাত-কাপড়ের আন্দোলন, খাবারের আন্দোলন, অধিকারের আন্দোলন, বেঁচে থাকার আন্দোলন, ভোটের অধিকারের আন্দোলন চলবে।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, বরকতউল্লাহ বুলু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান খোকন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মতিউর রহমান প্রমুখ।