আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সাম্প্রদায়িক, দুর্বৃত্তপরায়ণের রাজনীতিকে আমরা কবরস্থানে পাঠাবো। তারা আমাদের নেত্রীকে কবরস্থানে পাঠাতে চায়! আমরা তাদের রাজনীতিকে কবরস্থানে পাঠাতে চাই। দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই।
রোববার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজশাহীতে আবু সাইদ চাঁদ যে কথা বলেছে এটা তো মির্জা ফখরুলেরই মনের কথা। মির্জা ফখরুল চাপাবাজি অনেক করেছেন। আপনি কি জিজ্ঞেস করেছেন ওই চাঁদকে, শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার পরও? লজ্জা করে না? আপনাদের কর্মীরা বিপদে আছে? আপনাদের কর্মীদের অ্যারেস্ট করা হচ্ছে? হয়রানি করা হচ্ছে? ১৯ তারিখে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আজকে ২১ তারিখ, এখনও তিনি জেলে যাননি বাইরে আছেন, তিনি রাজশাহীতে আছেন। সরেজমিনে শুনে আসেন। আমার কাছে ভিডিও আছে। চাঁদ বলে, ‘আমাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে গোরস্থানে পাঠাতে হবে’।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। আজকের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সম্পর্কে যে কটূক্তি করেছে, এর প্রতিবাদ করতে হবে সারা বাংলায়। সারা বাংলায় বিক্ষোভ করতে হবে। এভাবে আজ ছেড়ে দেব না। এই নগরীতে তাদের বিক্ষোভের পাশে শান্তির সমাবেশ করেছি। একটা টুঁ শব্দ হয়নি। কোনও হানাহানি-মারামারি আওয়ামী লীগের কর্মীরা করতে যায়নি। মির্জা ফখরুলের লজ্জা থাকলে এই কথা স্বীকার করতো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে তারা এক দফার নামের শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল, আপনার জেলার আহ্বায়ক এক দফা নামে প্রকাশ্যে বলেছে- শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে নাকি পাঠাতে হবে। তারা নাকি এই এক দফা পালন করবে! তাই মহানগরসহ সারা দেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড সবাইকে বলতে চাই- আর শান্তি নয়, এবার প্রতিরোধ। অনেক শান্তির সমাবেশ আমরা করেছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আজ প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার জন্য লন্ডনের ফরমায়েশে, এরা দলে দলে লন্ডন যাচ্ছে। অস্ত্র শানাচ্ছে। শেখ হাসিনা হত্যা করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। আমাদের দাবি একটাই- অপশক্তির আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও।
তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আজকে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকেই মোকাবিলা করতে হবে। এই ষড়যন্ত্র গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে। এ ষড়যন্ত্র শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে। আজকের এই অপশক্তি বাংলাদেশকে আবারও দুর্নীতির পাহাড় বানাতে চায়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমান বাইরে বসে ফন্দি আঁটছে, পরামর্শ দিচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়। তারা নির্বাচন করবে না সেটা আমরা জানি। কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে আসলে বাংলার জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ করব। কোনও অপশক্তিকে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বাধা দিতে দেব না।
আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সারাদেশে প্রতিরোধের সংগ্রাম চলবে। চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আজ থেকে প্রতিরোধ চলবে। আজ থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের দুর্গ আমরা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেব। আমরা সত্যের পক্ষে আছি, আমরা ঈমানের পক্ষে আছি। শেখ হাসিনা একজন সৎ ও পরিশ্রমী নেতা। সারা জীবন মানুষের জন্য কষ্ট করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধুর মত শেখ হাসিনাও রাতে তিন ঘণ্টা ঘুমান মাত্র। এই বয়সে মাত্র তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে সারাক্ষণ দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন। ১৯৭৫ সালের পরে শেখ হাসিনার মতন নেতা আমরা আর পাইনি, আমরা ভাগ্যবান। এই নেতাকে আমরা হারাতে পারি না। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ।
তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে, আর ফিরে আসবে না জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক কবরে শুয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের বাইরে কোনও নির্বাচন হবে না। সব দেশে সংবিধানে নির্বাচন হয়। আমার দেশে কেন নয়? শেখ হাসিনা কেন পদত্যাগ করবেন?
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাদেক খান, আব্দুল কাদের খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, জহিরুল হক জিল্লু, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিজু প্রমুখ।