রাজনীতি

‘সরকার‌কে ক্ষমতা থেকে নামানো জনগণের সাংবিধানিক অধিকার’

গণতন্ত্র ম‌ঞ্চের আলোচনা সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব সংবিধানের পঁয়ষট্টি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘সংবিধানে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের কথা বলা আছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণ ভোট দেয়নি। কারচুপি, জালিয়াতি, ডলার পাচার করা এই সরকার সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের ক্ষমতা থেকে নামানো জনগণের সাংবিধানিক অধিকার’।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আ‌য়ো‌জিত ‘সংবিধানের দোহাই দিয়ে একতরফা নির্বাচন সংবিধান সম্মত নয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল স্পিরিট হচ্ছে, বহুমুখী নির্বাচন। একতরফা নির্বাচন সংবিধান সম্মত নয়।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনী মূলত ফরমায়েশি রায়। ফ্যাসিস্ট হাসিনা দ্বারা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে এই সংশোধনী।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীতে পরিষ্কারভাবে আরও দুই বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা হাইকোর্টের রায় সম্পূর্ণ অমান্য করে ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন করেছেন। এইভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সমস্যাটা সংবিধানের নয়, সমস্যাটা রাজনৈতিক। তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন যদি ব্যর্থ হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হতে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার পর পর দুইবার এমন ভোট করেছে সারা দুনিয়ার সরকার অবাক হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, সরকার সরকারি গুণ্ডাদের জন্য ব্যাংক-ট্রেজারি খালি করে ফেলেছে।

সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি সংবিধানের একাদশ অনুচ্ছেদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে সেটা নির্বাচন নয়। এটা সংবিধানের স্পিরিট নয়। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা নিজেদের মত করে সংবিধান তৈরি করে নিয়েছে এবং এটা শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তে হয়েছে।

পঞ্চদশ সংশোধনীর বিচারকী প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তি‌নি বলেন, তারা (সরকার) রায়কে বিকৃত করেছে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট দ্বারা আওয়ামী লীগ তাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সমালোচনাকে আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। এই সরকার সংবিধানের জালিয়াতি করে জনগণের সকল অধিকার হরণ করেছে।