দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট শরিকদের আসন বণ্টন সমঝোতা পিছিয়েছে। আসন বণ্টনের এই প্রক্রিয়া সমাধানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের শীর্ষ চার নেতাকে। যারা জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জোটনেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দীর্ঘ বৈঠকে ‘আসন সমঝোতা’ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলেও শেষ সমাধান হয়নি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ দলীয় জোটের আসন বণ্টন করার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জোটের প্রধান শেখ হাসিনা একটি টিম গঠন করেছেন। সেখানে জোটের পক্ষ থেকে ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এবং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দিয়ে এই সমন্বয় টিমটি গঠন করা হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা প্রত্যেকে কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর অধিকাংশ শীর্ষ নেতারা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। এছাড়া, শরিক দলগুলোর মনোনীত অন্যান্য প্রার্থীরা নিজের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন। জোটের নেতারা কে কোন আসনে নির্বাচন করবেন এবং কতগুলো আসন তাদেরকে দেওয়া হবে সে বিষয়ে দ্রুত সমাধান করবেন দায়িত্বশীল নেতারা।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে যাচ্ছি, এই বিষয়টা চূড়ান্ত হয়েছে। আর আসনের বিষয়টি আমির হোসেন আমু ভাই আর ওবায়দুল কাদের বসে ঠিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা সবাই মেনেই বৈঠক শেষ করেছি।
জোটের নেতারা জানান, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে-জোট নেতাদের সে কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জোটনেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে কেউ যেন কোনো প্রকার ত্রুটি খুঁজে না পায়, সেদিক লক্ষ্য রেখে নির্বাচনে সবাইকে অংশ নিতে হবে।
নির্বাচন সামনে রেখে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, ষড়যন্ত্র আছে সব মোকাবিলা করে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সবাইকে তাগিদ দেন।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে বৈঠক শুরু হয়। রাত প্রায় ১০টার দিকে শেষ হয় এ বৈঠক। জোটের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাতীয় পাটি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, ওয়াকার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ড. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি মোজাফফর আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।