রাজনীতি

একদিন গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় হবেই: ফারুক

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় একদিন না একদিন নিশ্চই হবে। সেই দিন বাংলাদেশের গরিব মানুষ পেট ভরে খেতে পারবে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কথা বলতে পারবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন।

প্রতিবাদ সভায় জয়নুল আবদিন ফারুক আরো বলেন, আজ এমন একটি দিন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল। সব সংবাদপত্র বন্ধ করে সব সরকারি-বেসরকারি মানুষকে এক দলে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জাতীয় সংসদে ১১ মিনিটে সংবিধান সংশোধন করে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল। আমরা এই কালো দিবসে আজকে দাঁড়িয়ে আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই, গত ৭ জানুয়ারি যে তামাশার নির্বাচন আপনারা (সরকার) মঞ্চস্থ করেছেন, দেশের জনগণ সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, বরং প্রত্যাখ্যান করেছে।

৭ জানুয়ারির নির্বাচন আবার পঁচাত্তর সালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলার আকাশে আবারো কালো ছায়া দেখতে পাচ্ছি। বাংলার আকাশে আবারো এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার আভাস মিলছে বলে আমরা মনে করি। তাই আজকে রাজপথে দাঁড়িয়ে আবারও সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, যে বাকশাল আপনারা নিজ হাতে তৈরি করে আবার নিজ হাতে জবাই দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গিয়েছেন, আবারও আপনারা পুরোনো ফন্দি এঁটে বাকশাল কায়েম করে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জগৎ থেকে শুরু করে দেশের মানুষ, যেইসব দলগুলো গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, যে সব মানুষ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করে, তাদের পথ বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের আভাস আমরা পাচ্ছি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের সরকার জেলে পাঠিয়েছে অভিযোগ করে এই নেতা আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে আপনারা (সরকার) মুক্তি দিচ্ছেন না। আপনারা মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, নির্বাহী কমিটির সদস্যদের রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার করেছেন।

তিনি বলেন, যেই নির্বাচন কমিশন ঘুমিয়ে থাকে, ঘুম থেকে উঠে বলে ২৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এক ঘণ্টা পরে কীভাবে ৪২ শতাংশ মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমি জানতে চাই। এর উত্তর আপনাকে (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) এই বাংলার মাটিতে একদিন না একদিন দিতেই হবে। বিএনপিকে ধ্বংস করার হীন প্রচেষ্টা থেকে আপনাকে সরে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল টিআইবি বলেছে, দেশের ৬৭ ভাগ সংসদ সদস্য কোটিপতির ওপরে। এই টাকা কই থেকে আসে? যেই ডিম তিন টাকা ছিল, সে ডিম এখন ১২ টাকা। যেই মোটা চাল ৪৪ টাকা ছিল, সেই চাল এখন ৬৫ টাকা। এসব সিন্ডিকেট করে তারা টাকার পাহাড় বানিয়েছেন।

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সহ-সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিম, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকী প্রমুখ।