ছাত্রলীগ-যুবলীগের রাজনীতি করলে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, আগে যাদের ঘরে খাবার ছিল না, তারা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আমরা আগে শুনেছি, জমিদাররা রাজনীতি করলে তাদের জমিদারি ফতুর হয়ে যায়। অথচ এখন ছাত্রলীগ-যুবলীগ করলে হাজার কোটি টাকা পাচার করা যায়।
বুধবার (২২ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের উদ্যোগে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিশ্বমৈত্রী কামনায় শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় আছে। তারা মানুষের ভোট কেড়ে নিয়েছে, মানুষের হাঁটাচলা, সমাবেশ করাসহ মানুষের কণ্ঠের স্বাধীনতাকে বন্ধ করেছে। সেই কণ্ঠের মধ্যে ফাঁসির দড়ি লাগিয়েছে। দেশের সার্বিক এই পরিবেশের বিরুদ্ধে বুদ্ধের বাণী আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। নিজে কষ্ট সহ্য করে হলেও সত্যের প্রতি তার যে আত্মনিবেদন, সেই আত্মনিবেদন স্মরণ করেই আগামী দিনে এই স্বৈরাচার পতনে আমাদের সবাইকে প্রত্যয় দীপ্ত হতে হবে, প্রত্যেককেই অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গৌতম বুদ্ধের বাণী এবং শিক্ষা ধারন করতে হবে। তিনি বলেছেন, নিজের অন্তরের আলোতে তোমরা চলো। অথচ আমাদেরকে অবৈধ সরকার নির্দেশ দেন-কিভাবে চলতে হবে। আমাদেরকে সমাবেশ করার জন্য পুলিশের পারমিশন নিতে হয়। গণতান্ত্রিকামী মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে, গৌতম বুদ্ধের যে বাণী- সেই অন্তরের আলোতেই আমরা চলি, চলতে চাই। আর সেই চলার পথে কেউ বাধা বিঘ্ন ঘটালে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা এটা ন্যায়সঙ্গত।
রিজভী আরও বলেন, এই পৃথিবীর একজন অনন্য শিক্ষক, তিনি ছিলেন রাজপুত্র, তাঁর নাম সিদ্ধার্থ। তরুণ বয়সে যখন তার বিলাসিতার কোনো অভাব ছিল না, যৌবনের তাড়নায় মানুষ কতকিছু না করে-সেই সময়ে বেদনার্থ হয়ে যে মানুষটি রাজ পরিবারের সমস্ত আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আত্মজয় করেছিলেন এবং বুদ্ধর্থ প্রাপ্তি হয়ে গোটা বিশ্বের শিক্ষকে পরিণত হয়েছিলেন। আজও তার কথা এবং বাণী অমলিন। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে যার জন্ম হয়েছিল আমাদের বাংলা থেকে খুব দূরে নয়, হিমালয় পর্বতের পদদেশেই একটি রাজ্যে। নিজের সুখ, আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে কী করে মানব কল্যাণে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতির জন্য যে অহিংসার বাণী প্রচার করেছিলেন, এটা যদি আজকের এই বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে প্রতিটা রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা একবার স্মরণ করতেন, চর্চা করতেন, তাহলে গোটা বিশ্বব্যাপী এত হানাহানি, এত রক্তপাত হতো না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-ধর্ম সম্পাদক অমলেন্দু দাশ অপু, জন গোমেজ, দীপেন দেওয়ান, সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ।