‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি কমিয়ে আনার কর্মকৌশলের পরিবর্তে কালো টাকা সাদা করার যে পদক্ষেপের কথা বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তাতে উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতি আরও উৎসাহিত হবে। সমাজে দুর্নীতি আরও বাড়বে।’
শুক্রবার (৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়েছে।দলটি মনে করে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উচ্চ বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে। সেই বাস্তবতা বাজেটে অনুপস্থিত। উল্টো পরোক্ষ করারোপের মাধ্যমে বৈষম্যকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। আর্থিক খাত সংস্কারের কথা বলা হলেও ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য, লুট, খেলাপি ঋণ বন্ধের কোনো উদ্যোগ বাজেটে নেই।
প্রস্তাবিত বাজেট দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সঙ্কট নিরসনে কোনো আশা জাগাতে পারেনি বলেও মনে করে ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির ভাষ্য, বাজেটে মূল্যস্ফীতির কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নিরসনে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা নিতান্তই অপ্রতুল। বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর অর্থনীতির বর্তমান সঙ্কটের দায় রাখা হয়েছে। অথচ, বাজেট বক্তৃতাতেই অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, একই বৈশ্বিক বাস্তবতায় ভারত ও শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি অনেক নিচে নামিয়ে আনতে পেরেছে। সেখানে বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করলেও কাজটি করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। যদিও ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।