একটা দেশকে ট্রানজিট দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের বিপক্ষে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
বুধবার (২৬ জুন) রাজধানীর তোপখানা রোডের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন সংগঠনটির নেতারা।
বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের সহ-সভাপতি সোহেল শিকদারের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন দলের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন। বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম এবং রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক।
প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকার এদেশের জনগনের টাকা খরচ করে ভারতকে ট্রানজিট, বন্দর ও বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তাই ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। ট্রানজিট যদি দিতেই হয় তাহলে সেটা হতে হবে ট্রান্স-এশিয়ান কানেকশনে যুক্ত সব দেশের সাথেই একে অপরকে দেওয়ার মাধ্যমে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটা দেশকে ট্রানজিট দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের বিপক্ষে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ফরিদুল হক বলেন, ইন্ডিয়া অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক বিকাশকে রুদ্ধ করতে চায়৷ কারণ দক্ষিণ এশিয়াকে একটা পিপলস ফেডারেশন ইউনিয়নে পরিণত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু ইন্ডিয়া তা হতে দিতে চায় না। এজন্যই সার্ককে তারা অকার্যকর করে রেখেছে। এ কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য আজ যারা সংগ্রাম করছে অর্থাৎ আমাদেরকে, ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় ‘ইসলামিক মৌলবাদী’ হিসেবে অপপ্রচার করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভোটারবিহীন, দিল্লির বরকন্দাজ অবৈধ হাসিনা সরকারকে ‘গণতান্ত্রিক’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে ইমরান ইমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে যেভাবে ইউরোপের মধ্যে ‘ফ্রি যাতায়াতের’ উদাহরণ দিয়েছে সেটা তো কোনভাবেই ভারত-বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। সেখানে যাতায়াত হয় সম-মর্যাদার দুইটা দেশের মধ্যে এবং সেখানে এক দেশ আরেক দেশকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরেও রাখে না, আর এক দেশের বাহিনী সেই কাঁটাতার পেরিয়ে এসে আরেক দেশের নাগরিকদের গুলি করে মারে না! ভারত রাষ্ট্র একদিকে আমাদেরকে কাঁটাতারে ঘিরে রেখেছে, আমাদের সীমানার ভেতরে ঢুকে আমাদেরকে গুলি করে মারছে, অন্যদিকে উনি তাদেরকে করিডোর দিয়ে এসে জনগণকে ইউরোপের উদাহরণ দিচ্ছেন। তাই এই মাফিয়াদের বিরুদ্ধে এবং তাদের সমর্থনকারী সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের লড়াইয়ের পথ শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক সংগ্রাম তথা রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান রিজু, ঢাকা জেলা সমন্বয়ক শাহাবুদ্দিন কবিরাজ লিটন, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সমন্বয়ক এহসান আহমেদ, দ্বীন ইসলাম, ইয়াকুব হোসেন প্রমুখ।