কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দীর্ঘায়িত করার সমালোচনা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোটার বিষয়টির একটি তাৎক্ষণিক সমাধান হয়েছে। তবু রাজনৈতিকভাবে মনোযোগ আকর্ষণের জন্য জনদুর্ভোগ তৈরি করা হচ্ছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সাদ্দাম হোসেন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এখন তারা আসলে চান কী? তারা কি চাকরিজীবী হতে চান, নাকি আন্দোলনজীবী হতে চান?’
সাদ্দাম হোসেন বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়টি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটি নীতি–আলোচনার বিষয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা জানান, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রস্তাব সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তসংবলিত লিফলেট বিতরণ, উন্মুক্ত আলোচনা ও জনদুর্ভোগের কর্মসূচি পরিহার করার জন্য প্রচারণা চালাবেন তারা।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, পলিটিক্যাল এটেনশন সিকিংয়ের জন্য শাহবাগে আন্দোলন হচ্ছে। ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এই কোটা আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এখানে সন্ত্রাসীদের গেট টুগেদার হয়েছে। আমরা সেখানে ছাত্রদলের ক্যাডারদেরও দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, মানুষকে টোকাই বলা মেধার পরিচয় না। তাদের মূল লক্ষ্য রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন। তারা বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। আন্দোলনকারীদের ভাব দেখে মনে হচ্ছে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে, মেধার স্বর্গে নয়।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, যারা আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ঘরে ফিরেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই। প্রফেশনাল আন্দোলনকারীরা এখনও রাজপথে আছে। তারা ব্লকেড ব্লকেড খেলা খেলছে। ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল রাখার পরও তারা আন্দোলন করছে। ক্ষণে ক্ষণে কথা পাল্টাচ্ছে। দাবি পাল্টাচ্ছে। তারা কি চাকরিজীবী হতে চায় নাকি আন্দোলনজীবী হতে চায়? সেটা জানতে হবে।
এটা (কোটা সংস্কার) স্পট ডিসিশনের কোনো ব্যাপার না। এর একটা নিয়ম আছে। আজ যারা নিজেদের মেধাবী দাবি করছে তারা কি বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ সম্পর্কে জানে?
কোটার বিষয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে সাদ্দাম বলেন, নারীদের সামনে আনতে তাদের কোনো কথা নেই। ২০১৮ এরপর কোটা না থাকায় নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। কমেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সংখ্যাও। বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ চাকরিই পায়নি। তাছাড়া ২০১৮ সালে আন্দোলনকারীদের একজনও বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন ও ওয়ালী আসিফের পাশে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। কোটা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির যৌক্তিক ও ইতিবাচক সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের যেকোনো মতামত লিখিত আকারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) অথবা officecellbsl@gmail.com-এই ই–মেইল ঠিকানায় পাঠানোর আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।