রাজনীতি

জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক: বিএনপি

জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের ঘটনাকে নিন্দনীয়, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ছাত্র আন্দোলনে বর্বরোচিত গণহত্যার দায়ে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের চলমান ইস্যুকে ধামাচাপা দিতে নতুন বিতর্ক, নতুন ইস্যু সামনে আনা হচ্ছে, যা বুমেরাং হতে বাধ্য। পরিকল্পিতভাবে ইস্যু বানানোর পুরাতন কার্ড নতুন করে খেলে আওয়ামী লীগ জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে পারবে না। শত শত ছাত্র, কিশোর, যুবক, শিশুসহ জনতার রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাত সোয়া ১০টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াত নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গণহত্যা, নৃশংসতা, ফাসিবাদী কায়দায় নির্মম-নির্দয় দমন- নিপীড়নের জন্য সরকার দেশ-বিদেশে যখন তীব্র ক্ষোভ, ঘৃণা, চাপের মুখোমুখি; জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যম যখন সরকারকে জবাবদিহি করতে বলছে; দেশে দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, আইনজীবী, যুবক, নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিবাদ, ধিক্কার জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগের দাবি উচ্চারিত হচ্ছে, তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন ও চাপে রাখতে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্ত ছাড়াই নিজেদের দায়-দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর চাপানোর অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এসব হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেরা পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি আরো জটিল ও সংঘাতময় করে তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানোর আশঙ্কা করছে দেশবাসী। অতীতেও তারা নিজেরা সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। চলমান আন্দোলনেও করছে। বিরোধী দল-মতকে নির্মূল করে বিরোধী দলশূন্য করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে রাষ্ট্রঘাতী আওয়ামী লীগ তা ভবিষ্যতেও করতে পারে। এজন্য দেশবাসী ও রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীকালেও ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ তৎকালীন বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে বাকশাল গঠন করেছিল। আওয়ামী লীগ এমন এক রাজনৈতিক দল, তারা ‘হয় সঙ্গী, না হয় জঙ্গী’ নীতিতে বিশ্বাসী। স্বাধীনতার পর জাসদকে নির্মূল করতে হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমভাবে দমন-নিপীড়ন চালিয়েছিল। এই জাসদকে আওয়ামী লীগ একসময় মরহুম শেখ মজিবুর রহমানের হত্যার প্রেক্ষাপট রচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করত। সেই জাসদের একেক সময় একেক ভগ্নাংশ নিয়ে জোট আছে। একসময়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাথে আওয়ামী লীগের সখ্যও সর্বজনবিদিত। একসময় তারা পরস্পরের সঙ্গী ছিল।

তিনি বলেন, আজ জামায়াত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরোধিতা করছে। তারা আজ আওয়ামী লীগের সঙ্গী নেই বলে আওয়ামী ভাষায় জঙ্গি হয়ে গেছে। কোন রাজনৈতিক দল জঙ্গি, তা দেশবাসী ভালো করেই জানেন। বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে জঙ্গির সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ।