ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, বিগত পতিত সরকার বিভিন্ন অজুহাতে জাতিকে বিভক্তি করে রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত ছিলো। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে দেশপ্রেমিক জনতার ওপর জুলুম নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গণহত্যার পথ বেছে নিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা হত্যা করেছে।গুলিবিদ্ধ করেছে লাখ লাখ ছাত্র জনতাকে।হাজার হাজার পঙ্গুত্ববরণ করে অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছে।অসংখ্য মানুষ চোখ হারিয়েছে,পা হারিয়েছে, হাত হারিয়েছে।অনেক মা-বোন বিধবা হয়েছে।কাজেই গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনার বিচার আগে করতে হবে।
তিনি বলেন, খুনিরা দেশ ছেড়ে পালালেও তাদের প্রেতাত্মারা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসে এখনও চক্রান্ত করছে।বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে তারা কখনো আনসার, চাকমা, গার্মেন্টস কর্মী কখনো জঙ্গি সেজে কাজ করছে। এসব অপকর্ম অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। সেই সাথে বাজার সিন্ডিকেটে জড়িতদের দমন করে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে বেশি দরকার।নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে।এগুলোকে সামাল দিতে না পারলে পতিত সরকারের ষড়যন্ত্র আরও বেড়ে যাবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা পশ্চিম থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। সংগঠনের উত্তরা পশ্চিম থানা শাখা সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা মাছউদুর রহমান ও মাওলানা জিয়াউর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুফতী হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, আলহাজ জাফর আলম, মুফতী আব্দুল কুদ্দুস রশিদী, হাফেজ নাজমুল হাসান, আবু বকর সিদ্দিক, যুবনেতা মুফতী হাফিজুল হক ফাইয়াজ, মুহাম্মদ আবু হানিফ, মুফতী মুফিজুর রহমান, হাফেজ জাকির হোসেন, আলমগীর হোসেন, আলাউদ্দিন সাবেরী, জাহাঙ্গীর আলম, কামরুল ইসলাম শরিফুল ইসলাম, জালাল আহমদ টিটু, এইচএম আলমগীর, আব্দুল হান্নান শাহীন প্রমুখ।
মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, যারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর করে দিয়ে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে সর্বত্র জুলুম নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলো সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন সেক্টরে নাস্তিক-মুরতাদদেরকে নিয়োগ দিয়ে ইসলামপন্থিদেরকে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক বলে গাল দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি শিক্ষা পরিমার্জন কমিটি থেকে আবু সাঈদ খানকে অপসারণের দাবি জানান। শিল্পকলা একাডেমি পরিচালক ইসলামের বিভিন্ন বিধান নিয়ে কটাক্ষ করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইসলামকে সহ্য করতে পারে না। এগুলোকে অপসারণ না করলে জনতার রুদ্ররোষ সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমান দুদকের মহাপরিচালক বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগের পাচার করা টাকা নাকি ফেরত আনা সম্ভব নয়। অথচ যে দেশে টাকা পাচার করেছে, সে দেশের মন্ত্রী বাংলাদেশ চাইলে তারা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য। দুদকে নিয়োজিতরা ফ্যাসিবাদের দোসর, তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে।