পজিটিভ বাংলাদেশ

মাল্টার সম্ভাবনাময় শহর পঞ্চগড়

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সমতল ভূমিতে লেবু জাতীয় ফসল ‘মালটা’ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চা, পান এবং কমলার মতো বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন এখানকার কৃষকেরা। দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টার বাগানও এ জেলায়।

প্রায় ২০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা বৃহৎ বাগানটির অবস্থান জেলার বোদা উপজেলায়। এছাড়া জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সমতল ভূমির চায়ের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবেও চাষ হচ্ছে মাল্টা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমতলের বিস্তীর্ণ চা বাগানে সারি সারি চা গাছের উপরে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা মাল্টা যেমন একদিকে বাগানের সৌন্দর্য বর্ধন করছে, তেমনি দিচ্ছে বাড়তি আয়ও। আর বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষ।

চাষিরা বলছেন, স্বাদে-গুণে অত্যন্ত সুস্বাদু এই মাল্টা সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। অল্প খরচে ভালো লাভ হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে তাদের। আর সাথী ফসল হিসেবে চা বাগানের সার-কীটনাশক দিয়েই মাল্টা উৎপাদন সম্ভব।

কথা হয় তেঁতুলিয়া উপজেলার রওশনপুর এলাকার মাল্টা চাষি সাদেকুল ইসলাম সুসমের সঙ্গে। তিনি দেড় বছর আগে বাবার দুই একর জমির চা বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মালটা চাষ করেন। তিনি বলেন, বাগান থেকেই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে মাল্টা কিনছেন ব্যবসায়ীরা। আমার বাগান থেকে এবার দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মালটা বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

এদিকে, বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের টেকরাপাড়ায় মাল্টা বাগান করেছেন সৈয়দ মাহফুজুর রহমান সেলিম নামের এক ব্যবসায়ী। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের এই ব্যবসায়ী দুই বছর আগে ২০ একর জমি লিজ নিয়ে এই বাগান করেন।

সৈয়দ মাহফুজুর রহমান সেলিম জানান, ৭ হাজার ৪০০ গাছের এই বাগানে এপর্যন্ত তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। ফলন ভালো হলে এক বছরেই দ্বিগুণ মুনাফার আশা করছেন তিনি। তবে এ বছরে তার বাগানে কিছু গাছে মাল্টার ফলন আসলেও আগামী বছরে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এখনো পর্যন্ত ৮৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ চাষিই বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করেছেন।

পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান বলেন, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কৃষকদের মালটা চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।