কিশোরগঞ্জ মানে মিঠামইন হাওরের মাঝে চোখ জুড়ানো সড়ক। প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট আর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। আবার দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে রাষ্ট্রপতিদের শহর। যে অঞ্চলে আজ থেকে দেড় যুগ আগেও বলার মতো তেমন উন্নয়ন ছিল না, কিন্তু গত একযুগে সেই দৃশ্য পুরোটাই পাল্টে গেছে উন্নয়নের ছোঁয়ায়। এখন জেলার পথে-প্রান্তরে, হাওরে-বিলে উন্নয়নের হাতছানি।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র অনুযায়ী, একযুগে কিশোরগঞ্জ জেলার সঙ্গে অন্য উপজেলা ও জেলার ব্যাপক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে কিশোরগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ, ভৈরব এবং হোসেনপুর উপজেলার রাস্তা প্রশস্ত ও উন্নত করা হয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ থেকে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক প্রশস্ত ও নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে আগামী ৫ বছরের একটি মাস্টারপ্ল্যানও করেছে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
জেলার সড়ক বিভাগের আওতায় জেলায় গত এক যুগে ছোট-বড় ২২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তার মধ্যে কিশোরগঞ্জের চরপুমদী সেতু, ইটনার চিলনী সেতু, মিঠামইন উপজেলার ঢাকী সেতু, হাসানপুর সেতু, অষ্টগ্রাম উপজেলার ভাতশালা সেতু উল্লেখযোগ্য। আরও ৪টি বড় সেতুর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। সেতুগুলো নির্মিত হলে জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সমৃদ্ধ হবে।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চিকিৎসা বিষয়ক উচ্চ শিক্ষাদানকারী শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালটি ২০২০ সালের ১৭ মার্চ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়েছে। এছাড়া ২০১৩ সালে বেসরকারি উদ্যোগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি কলেজ। এখানে এমবিবিএস ডিগ্রির পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হয়ে থাকে। সর্ব সাধারণের চিকিৎসার জন্য জেলায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল রয়েছে। জেলা সদর ছাড়া বাকি ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ১৯৮৩ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৮ সালের ১ জুন নিজস্ব ভবনে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে গণগ্রন্থাগারটিকে। এখানে মোট ২৯ হাজার ৭৭৮টি বই রয়েছে। এছাড়া জেলার আরেকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাগার হচ্ছে পাবলিক লাইব্রেরি। ১৯৩৫ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমার তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার কিউ.এম রহমান প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে লাইব্রেরিতে সংগৃহীত রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ। পাবলিক লাইব্রেরির তৃতীয়তলায় রয়েছে একটি মিনি মিউজিয়াম। মিউজিয়ামে সংগৃহীত আছে ইশা খাঁর আমলের বহু পুরনো গদা, রামদা ও তরবারি। মিউজিয়ামে রয়েছে হাতে লেখা পবিত্র কোরআন শরীফ, মহাভারত। এছাড়াও রয়েছে এগারসিন্দুর থেকে প্রাপ্ত শিলালিপি ও পাথরখণ্ড। বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলায় প্রায় আড়াই হাজার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। সংগঠনগুলো জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও শহর সমবায় সমিতির মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। সারাবছর এসব সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনাভাইরাস রোধে সচেতনতায় মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছে। এছাড়াও সংগঠনগুলো রক্তদান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অসহায় মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, বৃক্ষরোপণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, প্রতিবন্ধীদের সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিনামূল্যে খাদ্য ও ওষুধ বিতরণ করে আসছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে অবস্থিত আধুনিক স্থাপত্যের এক ঐতিহাসিক নিদর্শন শহীদী মসজিদ। এ মসজিদটি এ অঞ্চলের ইতিহাসের এক বিরল নিদর্শন। মূল শহরের প্রাণকেন্দ্রে পুরান থানায় মসজিদের অবস্থান। এছাড়া ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থাপনা হিসেবে খ্যাত পাগলা মসজিদ। সব ধর্মালম্বীর কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত এটি। কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় মসজিদটি অবস্থিত। যেখানে প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্স খুলেই পাওয়া যায় কোটি টাকার উপরে অর্থ, বৈদিশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।
সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলায় বেশকিছু মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে শ্রীশ্রী কালীবাড়ী, শ্রীশ্রী লোকনাথ বাবার আশ্রম, কবি চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির, কটিয়াদীর উপজেলার আচমিতায় অবস্থিত গোপীনাথ মন্দির বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানো মতো একটি জেলা কিশোরগঞ্জ। যেখানে পুরাকীর্তির পাশাপাশি ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। পর্যটনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে জেলার হাওর উপজেলাগুলো। প্রতি বছর বর্ষায় সেখানে লাখ লাখ পর্যটক ঘুরতে আসেন। হাওর ছাড়াও ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর জেলা কিশোরগঞ্জ। এখানে দেখা মিলবে ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে খ্যাত পুরাকীর্তির নিদর্শন জঙ্গলবাড়ী, এগারসিন্দর দুর্গ, উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর বাড়ি, দিল্লির আখড়া, ইটনার শাহী মসজিদ, পাগলা মসজিদ, গাঙ্গাটিয়া জমিদারবাড়ী, তালজাঙ্গা জমিদারবাড়ী, সুকুমার রায়ের বাড়ি, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ, অষ্টগ্রামের কুতুব শাহ মসজিদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু এবং নরসুন্দা লেকসিটি।
কিশোরগঞ্জ নেহাল গ্রিন পার্ক, উবাই পার্ক, পৌর পার্ক ও মায়াকানন উল্লেখযোগ্য। তবে বাংলা ইতিহাসের কথা বলে, মরুদ্বীপ স্বাধীনতা-৭১ পার্কটি। যেটি কটিয়াদীর লোহাজুরী গ্রামে তৈরি হয়েছে। এছাড়াও সরকারি উদ্যোগে আইটি ভিলেজ বা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধকে লালন করে ভৈরবের দুর্জয় স্মৃতি ভাস্কর্য, তাড়াইলে স্বাধীনতা-৭১, জেলা সদরে বিন্নাটি মোড়ে বিজয় স্মৃতি সৌধ। শহরের নরসুন্দা নদীর পাশে বিজয় চত্বরে তৈরি হয়েছে, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত ম্যুরাল ও উন্মুক্ত পার্ক।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও কনফারেন্সের জন্য জেলা শহরে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি কমিউনিটি সেন্টার। পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় তৈরি হয়েছে আধুনিক মানসম্পন্ন মার্কেট, শপিং সেন্টার ও শপিং মল।
জেলার পুরাতন স্টেডিয়ামের পাশাপাশি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে আন্তর্জাতিক মানের আরও একটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বছরে বিভিন্ন লীগ অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ক্লাব ও ক্রীড়া সংগঠনগুলোও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। পাশাপাশি খেলোয়াড় তৈরিতে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়।
ষোড়শ শতাব্দীর সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়-কিশোরগঞ্জ জেলাকে। এ জেলায় অনেক গুণী শিল্পীদের জন্মস্থান। লোকজ সাংস্কৃতিক ভান্ডার কিশোরগঞ্জ। এমন সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি জেলা শিল্পকলাও বেশ অবদান রেখেছে। এদিকে আধুনিক সংগীত চর্চায় বেশ কয়েকটি ব্যান্ডদল তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে স্কাইলার্ক ও ডুয়ার্স উল্লেখযোগ্য।
নরসুন্দা নদীকে ঘিরে লেকসটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে নদী ভরাট বা দখল বন্ধ হয়নি। বড় পুকুরগুলো, যা একসময় মানুষের উপস্থিতিতে কলরব ছিল। সেগুলো দিনের পর দিন ব্যবহার না করায় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। হাওরে-নদীতে ঘের করে মাছের চাষের পাশাপাশি জেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রচুর পরিমাণ ফিসারীতে মৎস চাষ হচ্ছে। পাশাপাশি জেলায় মুরগি, হাঁস ও গরুর খামার দিয়েও অনেক মানুষ নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছেন।
তথ্য প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে জেলায় প্রচুর উদ্যোক্তা ও উদ্যোক্তা সংগঠন তৈরি হয়েছে। এসব উদ্যোক্তার হাতে তৈরি বিভিন্ন খাবার, হ্যান্ডক্রাফ্ট ও কাপড়ে হ্যান্ডপেইন্টে অর্থনৈতিক সফলতা পাচ্ছেন। পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোও ব্যবসায় প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
২০১০ সালে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে প্রস্তাবের পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিুকর রহমান কিশোরগঞ্জের ‘সরকারি শিশুসদন বালক’-এর জমিতে শান্তিনিকেতন নামের ওই বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো কোনো বৃদ্ধাশ্রম সেখানে গড়ে উঠেনি।
একযুগে সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানের শাখা অফিস তৈরি হয়েছে। ফলে মানুষের জীবনযাত্রা ও ব্যবসায়ীক সম্প্রসারণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বরাবরই গুণীজনদের ভিড়ে সমৃদ্ধ এক জেলা কিশোরগঞ্জ। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি (ব্যক্তি হিসেবে ১৭তম)। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কিশোরগঞ্জ জেলায় ছোট-বড় মোট ২১১টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নে জামতলা ও মইশাখালীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে কিছু কিছু জায়গায় হাট জমে। শোলাকিয়া, পৌর মার্কেট সম্মুখে, নীলগঞ্জ বাজার উল্লেখযোগ্য। নৌপথে চলাচলের জন্য করিমগঞ্জ চামটাবন্দর, বালিখোলা ঘাট, বাজিতপুর দিঘীরপাড় ঘাট, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম নৌ ও ফেরীঘাট রয়েছে। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গাইটাল এলাকায় অবস্থিত আন্তঃজেলা বাসস্ট্যান্ড। যেখান থেকে প্রতিদিন ঢাকা, ময়মসিংহ, টাঙ্গাইল, যশোর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ-১ সংসদীয় আসনের সাংসদ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমার বাবা এ দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি দেশের মানুষের জন্য নিজে শহীদ হয়েছেন। তারই পথ অনুসরণ করে এ সংসদীয় আসনে দীর্ঘদিন মানুষের জন্য কাজ করেছিলেন আমার ভাই সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তার মৃত্যুর পর আমি এ আসনে সংসদীয় পদে রয়েছি। আমার বাবা ও ভাইয়ের মতো আমিও এখানকার মানুষের উন্নয়নে প্রাণ খুলে সেবা করতে চাই।’
কিশোরগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসনের সাংসদ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন এ আসনের সাংসদ। আমার আগে আমার বাবা বর্তমান রাষ্ট্রপতি এ আসনের ৫ বার গর্বিত সাংসদ ছিলেন। হাওর এবং হাওরবাসীকে নিয়ে তার যে স্বপ্ন ছিল, তার বাস্তবায়ন অনেকটাই তিনি করে গিয়েছেন। হাওরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। মানুষ এখন যেকোনো জিনিস হাতের নাগালেই পাচ্ছেন। আশা করি ভবিষ্যতের জন্য আরও যেসব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, তাতে হাওর পাড়ের মানুষের কষ্ট অনেক লাঘব হবে।’
তবে জেলা সদর নিয়ে মানুষের মনে অনেক আক্ষেপ রয়েছে। একটি জেলা সদর যতটুকু উন্নত হওয়া প্রয়োজন তার থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। সাধারণ মানুষ মনে করেন, জেলা সদরকে মডেল টাউন করলে সুন্দর হবে। পাশাপাশি পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে রূপ দিলে মানুষের সেবার উন্নতি ঘটবে। তাছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হলো নরসুন্দা নদীকে পুনরায় খনন করে ময়লার ভাগাড় থেকে উত্তোরণ করতে হবে। হোসেনপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদকে ড্রেজিং করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও শহরে তারের জঞ্জাল সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে সব ক্যাবল ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হবে।