দেহঘড়ি

বাতজ্বর সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

বাতজ্বর সম্পর্কে মানুষের সঠিক ধারণার অভাব রয়েছে। অনেক সময় কয়েকটি লক্ষণ দেখেই ধরে নেওয়া হয় বাতজ্বর হয়েছে। বাতজ্বরের ভুল চিকিৎসা অন্য অনেক রোগ বাড়িয়ে দিতে পারে। মনে রাখা দরকার বাতজ্বর শুধুমাত্র জ্বর বা গিটের ব্যথাজনিত অসুখ নয়। অন্য আরও অনেক সমস্যা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। শরীর ব্যথা মানেই বাতজ্বর নয়। বাতজ্বর মূলত শিশু-কিশোরদের রোগ।

গ্রীন লাইফ মেডেকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক এবং মেডিসিন ও বাতজ্বর বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা স্বপ্না বলেন, এই রোগটি সম্পর্কে অনেকের ভুল ধারণা আছে। যা এই রোগের চিকিৎসায় একটি বড় রকমের সমস্যা। সবাই মনে করে বাতজ্বর মানের গিরে ব্যথা। হ্যাঁ এই সমস্যা হয় তবে এর থেকেও বড় কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন হার্টের ভাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

আরেকটা ধারণা আছে পেনিসিলিন ওষুধ বা ইনজেকশন ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়, আসলে পেনিসিলিন ওষুধ বা ইনজেকশন হার্টের ভাল্ব ভালো রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। এখানে ব্যথা কমানোর কোনো ব্যাপার নাই। 

অনেকেই মনে করেন বাতজ্বর হলে পুরো শরীর ব্যথা হবে। আসলে তা নয়। এই রোগ হলে শরীরের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হয়। চিকিৎসা করেন আর নাই করেন দেখা যায় যে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা কমে যায়। যাদের দীর্ঘদিন ব্যথা স্থায়ী হয় তাদের বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কম। 

আরেকটা ধারনা আছে যেকোন বয়সে বাতজ্বর হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে বাতজ্বর মূলত শিশুদের অসুখ। এই রোগ সাধারণত ১৫-১৮ বছর বয়সেই বেশি হয়। ২৫ বছর বয়সের পরে বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। 

বাতজ্বরের ব্যথা একটি গিরা থেকে কমে আরেকটি গিরায় চলে যায়। বুক ধরফর করতে পারে। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। চামড়ায় র‌্যাশ হতে পারে। কখনো কখনো ব্রেনে কিছু অ্যাবনরমাল মুভমেন্ট হয়। জ্বর থাকতে পারে এবং হার্টে ব্লক থাকতে পারে। গলায় এএসও টাইটার দেখা দেয়। 

তবে এএসও টাইটার দেখার পরেই বাতজ্বরের চিকিৎসা শুরু করা কখনোই যুক্তিসঙ্গত নয়। 

রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তা নাহলে ভুল চিকিৎসার কারণে অন্য জটিলতা তৈরি হতে পারে।