চিকিৎসকেরা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের কোনো সতর্কতামূলক উপসর্গ থাকে না। সু্স্থ মানুষেরও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা উচিত। যাতে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায় এবং হাসপাতালে নেওয়া যায়। মানুষের পুরো শরীরে অক্সিজেন এবং পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে হার্ট। হার্টের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়।
ভারতের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: পৃথ্বীরাজ ভট্টাচার্য বলেছেন, হার্ট অ্যাটাকের বড় উপসর্গ হচ্ছে বুকে ব্যথা। হাঁটতে-চলতে গেলে বা সিঁড়ি উঠতে গেলে বুকে ব্যথা অনুভব হতে পারে। হার্টের ব্যথা বিশ্রাম নিলে ধীরে ধীরে কমে যায়। এই লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়।
হার্ট অ্যাটাকের প্রথম লক্ষণ বুকের ডান বা বাম পাশে ব্যথা হবে না। একেবারে বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা হবে। রোগীর মনে হতে পারে, কেউ বুকের মধ্যে ছুরি চালাচ্ছে বা বুকের মধ্যে হাতি পাড়া দিচ্ছে এবং বুকের হাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। হার্ট অ্যাটাক হলে বাম হাতে ব্যথা নিচের দিকে নামতে থাকে এবং গলায় চেপে ধরা ভাব অনুভব হয়।বুকের প্রচণ্ড ব্যথা অনেক সময় পেটে ছড়িয়ে পড়ে।
হার্টের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালী বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডা. পৃথ্বীরাজ বলেছেন, হঠাৎ করে মাথা ঘোরা, চোখে আবছা দেখা, সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়া— এসব সমস্যা দেখা দিলে বুঝতে হবে হার্ট অসুস্থতার দিকে যাচ্ছে। প্রয়োজনে ইসিজি বা ইকো করা যেতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। হার্টের রোগ নির্ণয়ে হল্টার মনিটরিং করা লাগতে পারে। এজন্য ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে টেস্ট করা লাগতে পারে। প্রয়োজনে রোগীর অ্যাঞ্জিওগ্রাফি টেস্টও করা লাগতে পারে।
হৃদরোগ প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগী প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের পরে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। হার্ট ভালো রাখার জন্য ডায়াবেটিস, প্রেশার এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, মদ্যপান না করা, কম তেল-মশলা যুক্ত খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যায়।
তথ্যসূত্র: বিবিসি , টাইমস অব ইন্ডিয়া