দেহঘড়ি

পিংক সল্ট নাকি সাধারণ লবণ ভালো

হিমালয়ান লবণ, গোলাপি লবণ বা পিংক সল্ট  যে নামেই  বলা হোক না কেন আমাদের শহুরে জীবনে গত কয়েক বছরে এই খাদ্য উপাদানটি  ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। অনেকেই মনে করেন,  সাধারণ লবণের চেয়ে এই পিংক সল্ট অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এই ধারণা কতটুকু সত্য— সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি। 

জাহানারা আক্তার সুমি রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন,  অনেকেই দাবি করেন  সাধারণ লবণের চেয়ে এই পিংক সল্ট অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর এবং পিংক সল্টের রয়েছে অনেক বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা। যদিও এই দাবির পক্ষে সেরকম কোনো গবেষণাপ্রসু ফলাফল আমরা পাইনি। যা থেকে এর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। পিংক সল্ট এক ধরনের শিলা লবণ যা মূলত পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলে উৎপাদন হয়। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় বলে বেশি পরিশোধনের প্রয়োজন হয় না এবং অনেক বেশি নিরাপদ। এটি খাবার টেবিলে, রান্নায়, চিকিৎসায় বা রূপচর্চায় বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পিংক সল্ট বা সাধারণ খাদ্য লবণ এই দুই ধরনের লবণের মধ্যেই রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। দুই ধরনের লবণের মধ্যেই খনিজ উপাদানগুলোর অনুপাতে খুব বেশি পার্থক্য নেই। যেমন সাধারণ খাবার লবণে সোডিয়াম  ক্লোরাইড থাকে ৯৯%  কিন্তু পিংক সল্টে সোডিয়াম থাকে ৯৬/৯৭ %। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম   তূলনামূলক ভাবে একই রকম থাকে দুই ধরনের লবণে। পিংক সল্টে আয়রন অক্সাইডের উপস্থিতির জন্যই এটি দেখতে গোলাপি আভার হয়।  আর এই রঙের জন্যই এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়েছে।’

জাহানারা আক্তার সুমি আরও বলেন, ‘আমরা লবণ গ্রহণ করি মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইডের জন্য। আমাদের রক্তে সোডিয়াম এর পরিমাণ যদি কমে যায় সেই সাথে পটাসিয়াম লেভেলও যদি  কমে যায় তাহলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স এর ঘটনা ঘটে থাকে। যা কিনা শরীরের জন্য  মারাত্মক  ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে লবণ গ্রহণ করা উচিত।’

তুলনামূলক সাধারণ লবণ ভালো বলে মনে করেন এই পুষ্টিবিদ। এদিকে পিংক সল্ট সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি দামি। সেদিক বিবেচনা করলেও সাধারণ লবণকেই এগিয়ে রাখা যায়।

‘সাধারণ লবণের মাধ্যমেই আমাদের প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ করতে পারি। বরং খাদ্য লবণকে সরকারিভাবে ফর্টিফাইড করা হয় এবং আয়োডিন যুক্ত করা হয়। এই আয়োডিন কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান যা পিংক সল্টে অনুপস্থিত। তাই নিয়মিত পিংক সল্ট গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়োডিনেরর ঘাটতি জনিত সমস্যাগুলো দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’— যোগ করেন জাহানারা আক্তার সুমি।