শোল্ডার জয়েন্ট বা কাঁধের অস্থিসন্ধির এক প্রকার অসুখ হচ্ছে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা হয় এবং রোগী হাত ওঠাতে পারেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাত পেছনে নিতে সমস্যা হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম ‘অ্যাডেসিভ ক্যাপসুলাইটিস’। ফ্রোজেন শোল্ডারের ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। আবার কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমেও এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অনেক সময় এই রোগ সারতে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। ফ্রোজেন শোল্ডারের চিকিৎসা না করালে কাঁধের মাংসপেশি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে পারে।
কেয়ার হসপিটালের তথ্য, ফ্রোজেন শোল্ডারের লক্ষণ কাঁধের জয়েন্টের মধ্যে ব্যথা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া। ব্যথা এবং অস্বস্তির কারণে ঘুম কমে যাওয়া। রাতের বেলায় ব্যথার তীব্রতা অনুভব করা।
প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার, মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজার্ডারস বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ফ্রোজেন শোল্ডার নির্দিষ্ট কোনো অসুস্থতা নয়। এটি অসুস্থতার উপসর্গ। শোল্ডার জয়েন্টের মধ্যে এক প্রকার পর্দা থাকে। এই পর্দা সহজেই আক্রান্ত হয়। যেমন কেউ হঠাৎ পড়ে গেলেন তখন কোনো ব্যথা অনুভব করলেন না কিন্তু কিছুদিন পরে বুঝতে পারলেন হাত ব্যথা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী পেছনে হাত নিতে পারেন না বা হাত বাঁকাতে পারেন না।’
আলতাফ হোসেন সরকার আরও বলেন, ‘ঘরোয়া উপায়ে ব্যথা কমাতে নারকেল তেল এবং রসুন নিয়ে হাতের জয়েন্টের ব্যথাস্থানে এবং এর চারপাশে মালিশ করতে হবে। এরপরে আক্রান্ত স্থানে গরম সেঁক দিতে হবে। তারপরে ব্যায়াম করতে হবে। এ জন্য প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে একটি দেয়ালের সঙ্গে আক্রান্ত হাতটি রাখতে হবে। এরপর একটু একটু করে হাতটি ওপরের দিকে তুলতে হবে।’
এর পরেও হাত নাড়াতে সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যায়াম করতে হবে এবং ওষুধ সেবন করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ বয়সি ব্যক্তিদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় ভোগা রোগীরাও এই রোগে ভুগতে পারেন। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন।