দ্রুত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা যাচাইয়ের ট্রায়াল এ সপ্তাহে শেষ হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে কিটের কার্যাকারিতার বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের ট্রায়াল স্থগিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কথা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কিট দিয়ে করোনা শনাক্তের দুটি প্রদ্ধতি আছে—একটা অ্যান্টিজেন, আরেকটা অ্যান্টিবডি। অ্যান্টিবডি যেটা, তা ব্লাড দিয়ে করতে হয় এবং অ্যান্টিজেন যেটা, তা মুখের লালা নিয়ে করতে হয়। অ্যান্টিবডিটা ঠিক আছে। তারা জানিয়েছেন, ভালো কাজ করছে। কিন্তু অ্যান্টিজেন যেটা, তাতে একটু সমস্যা হয়েছে। সঠিকভাবে ফলাফল আসছে না।’
কেন সঠিক ফল আসছে না, তার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, যেভাবে যে অংশ থেকে লালা নেওয়া দরকার, সে অংশ থেকে ঠিক সেভাবে না নেওয়ার কারণে ফলাফলও ঠিকভাবে হচ্ছে না।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ এপ্রিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে আইসিডিডিআর,বি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিটের কার্যকারিতা যাচাইয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রায়াল চলছে। দুই দফায় গণস্বাস্থ্য থেকে বিএসএমএমইউতে ১ হাজার কিট সরবরাহ করা হয়।
অ্যান্টিবডি প্রক্রিয়ায় ফল ভালো আসলেও অ্যান্টিজেন প্রক্রিয়ায় ভালো ফল না আসার বিষয়ে বিএসএমএমইউ থেকে গণস্বাস্থ্যকে জানানোর পর তারা বিএসএমএমইউতে একটি চিঠি পাঠায়।
এ বিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ওনাদের (বিএসএমএমইউ) টিম আমাদের জানানোর পরে আমরা তাদের জানিয়েছি, যেহেতু অ্যান্টিবডিটা ঠিক আছে, ভালো ফলাফল পেয়েছেন, অ্যান্টিবডিটায় আমাদের অনুমতি দিয়ে দেন। আর অ্যান্টিজেনের ব্যাপারে আমরা দেখি নতুন করে আপনাদের কোনো কাঠামো দিতে পারি কি না। ওইটা আপাতত স্থগিত রাখেন। দেওয়ার পরে আপনার আবার শুরু করেন। তাহলে ফলাফলটা ভালো পাবেন।’
চিঠি পাঠানোর পর বিএসএমএমইউ থেকে গণস্বাস্থ্যকে পরবর্তীতে আর কিছু জানানো হয়নি বলে জানান তিনি।
তবে অ্যান্টিজেনে যেহেতু একটু সমস্যা হয়েছে, গণস্বাস্থ্যের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তারা অপেক্ষা করবে কি না বা শুধু অ্যান্টিবডির ফলাফল দেবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউর টিমের দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ না করে কেটে দিয়েছেন।
ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘আমরা তাদের এই চিঠিটি দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে বিকৃত করে লিখেছে যে, আমাদের কিটের ফল ভালো না।’
এদিকে, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, গণস্বাস্থ্যের কিট অনুমোদনে ব্যাপারে গণস্বাস্থ্য থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লিগ্যাল নোটিস দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এক বিজ্ঞপ্তিতে গণস্বাস্থ্য জানিয়েছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে গণস্বাস্থ্য কোনো প্রকার লিগ্যাল নোটিস দেয়নি।
ঢাকা/সাওন/রফিক