করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপরোশন (ডিএনসিসি) ২৫টি স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছিল। তবে তিন মাসের মাথায় এই উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করলেও এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নজরদারিও ছিলো না।
ডিএনসিসিও রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এজন্য সংস্থাটি লোকবলের সংকটকে দায়ী করেছে। তবে পরবর্তীতে আবারও এই উদ্যোগ কার্যকরভাবে বস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে তারা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, শেওড়াপাড়া, রামপুরা, মিরপুর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুরুর দিকে হাত ধোয়ার বেসিন বসানো হলেও, ওই সময় পানি এবং সাবান থাকত না। কয়েকদিন অকার্যকর থাকার পর সেগুলো হঠাৎ করে আর দেখা যায় না। মানুষেরও আগ্রহ ছিলো না।
শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বসানোর প্রথম কয়েকদিন হাত ধোয়ার বেসিন দেখেছিলাম। এখন তো এগুলো নেই।
মোহাম্মদপুরের বসিলা রোডের বাসিন্দা তারিফুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিকে পানি, সাবান থাকত না। এখন তো বেসিনই উধাও।
গত ১৭ মার্চ গুলশান-২ নম্বরে ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে মেয়র আতিকুল ইসলাম ও তৎকালীন প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা পথচারীদের জন্য ২৫টি স্থানে হাত ধোয়া কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
২৫ স্থান হলো-উত্তরায় রবীন্দ্র সরণি (বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চ), রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে, মাসকট প্লাজার সামনে, খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের সামনে, মিরপুরে সনি সিনেমা হলের সামনে, গ্রামীণ ব্যাংকের বিপরীত দিকে ডিএনসিসি আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে ফায়ার সার্ভিসের সামনে, মিরপুর-১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড, মিরপুর-১৪ নম্বর মার্ক মেডিক্যালের সামনে, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের শাহ আলী মার্কেটের কোনায়, মিরপুর শপিংমলের নিচে (মিরপুর সরকারি কলেজের বিপরীতে), মিরপুর-১ নম্বর কো-অপারেটিভ মার্কেটের সামনে, গাবতলী পশুর হাট, শ্যাওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড, ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে, মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে, মোহাম্মদপুর বসিলা রোডের নতুন রাস্তার কালভার্টের ওপর, কাওরান বাজার (কিচেন মার্কেটের সামনে), আগারগাঁও পঙ্গু হাসপাতালের সামনে, গুলশান-২ ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে, গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে, কাকলী বাসস্ট্যান্ড, মহাখালী ডিএনসিসি আঞ্চলিক অফিসের সামনে এবং রামপুরা বাজার।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, হাত ধোয়ার উদ্যোগ নেওয়ার পর সেসব জায়গায় পানি ঠিকমতো সরবরাহ করা যায়নি। সাবান দিলে চুরি হয়ে যেত। কয়েক জায়গায় কল খোয়া গেছে। এছাড়া লোকবলের সংকটের কারণে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে দেখভাল করার জন্য লোক দেওয়া যায়নি। তবে ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে ডিএনসিসি হাত ধোয়ার জায়গা তৈরি করতে পরিকল্পনা নিয়েছে। ডিজাইনও তৈরি করছে প্রকৌশল বিভাগ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন বলেন, অনেকগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। আমাদের সার্বক্ষণিক লোক রাখা যেমন কঠিন ছিল, তেমনি না রাখার কারণে রক্ষণাবেক্ষণ অসম্ভব ছিল। যেসব জায়গায় আমাদের লোক আছে সেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু চালু আছে। বাকিগুলো চালু নেই। তবে হাত ধোয়ার উদ্যোগটা ভিন্ন উপায়ে করা যায় কী না সেটা নিয়ে চিন্তা করছি। নূর/সাইফ