করোনার সময়ে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা’ স্যাভলনের অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তারা। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্যাভলনসহ অন্যান্য জীবাণুনাশকের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই। এই কারণে যারা আগে থেকে পণ্যটি মজুদ করেছেন, তাদের কাছ থেকে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। এদিকে, নকল স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হেক্সসলে মার্কেট সয়লাব হয়ে গেছে। র্যাব বলছে, যারা অতিরিক্ত দাম রাখবেন ও নকল পণ্য বিক্রি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর পল্টনে সার্জিক্যাল মার্কেট ও শাহবাগের ওষুধের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্যাভলনসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের জীবাণুনাশকদের চাহিদা গত চার মাসে বহুগুণে বেড়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা জয়নুল হক বলেন, ‘‘গত শনিবার ৫০০ এমএল স্যাভলন ১৯০ টাকায় কিনতে হয়েছে। অথচ এর গায়ের দাম ১২৫ টাকা। আর ২২০ টাকা দামের ১ লিটার স্যাভলন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকায়। ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা’ যে দাম চান, সে দামে না কিনে কোনো উপায় নেই। দাম বাড়ার নানা অজুহাত দেখান তারা।’ একই অভিযোগ জানালেন শ্যামলীর ওবায়দুল হকও।
অতিরিক্ত দাম প্রসঙ্গে শাহবাগের ঢাকা ফার্মেসির মালিক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘অর্ডার করেও স্যাভলন পাচ্ছি না। কিন্তু ক্রেতারা এসে খোঁজেন। এ কারণে পাইকারি বাজার থেকে অতিরিক্ত দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’
সেবা ফার্মেসির জুয়েল হোসেন বলেন, ‘অনেকেই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। গায়ের দামে কিনতে পারলে ন্যায্য দামে বিক্রিও করা যেতো।’
বেশি দামে স্যাভলন বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাসুম আরেফিন বলেন, ‘বাজারে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বাড়তি দাম নেওয়ার বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে র্যাব-৩-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
ভালোমতো খেয়াল না করলে বোঝার উপায় নেই স্যাভলন নাকি অন্যকিছু
নকল জাবীনুনাশকে বাজার সয়লাব
আসল জীবাণুনাশকের সরবরাহ কম হলেও নকল পণ্যে সয়লাব বাজার। নামকরা কোম্পানিগুলোর লোগোর হুবহু নকল করে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাত থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার অলি-গলির দোকানেও। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার লাইজল ও হেক্সাসল।
নকল পণ্য প্রসঙ্গে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু বলেন, ‘নকল জীবাণুনাশকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। কারখানাগুলো সিলগালা করে দেওয়া হচ্ছে।’ পণ্য কেনার সময় ভালো করে নিতে ক্রেতাদের আহ্বান জানান তিনি। নূর/এনই