আগামী ২১ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরীতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ঢাকেশ্বরীতে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বসছে না মেলা, থাকছে না আরতি প্রতিযোগিতা।
শনিবার (১০ অক্টোবর) ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরের আশপাশে পরিষ্কার-পরিছন্নতা ও মন্দির প্রাঙ্গণে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রতিমা গড়া হয়েছে। বাকি আছে রং করার কাজ।
ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবছর আমরা ‘‘দুর্গা উৎসব’’ বলছি না, ‘‘দুর্গাপূজা’’ বলছি। অর্থাৎ, আমরা পূজা করব। সেখানে কোনো ধরনের উৎসব থাকবে না। কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে না। কোনো মেলা থাকবে না। শুধু পূজা হবে। প্রতিবছর বিজয়া দশমীর পরে পুরো ঢাকা শহর থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে মিছিল সহকারে ঢাকেশ্বরী মন্দির আসা হয়। এখান থেকে আমরা ওয়াইজঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে যাই। শোভাযাত্রা করা হয়। এবছর আমরা সেসব করছি না।’
মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভক্তরা একটি পথ দিয়ে মন্দিরে ঢুকবেন, অন্য পথ দিয়ে বেরিয়ে যাবেন। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যিনি মাস্ক পরবেন না, তাকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সার্বজনীন পূজা কমিটির পক্ষ থেকে ২৬ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরের সব পূজামণ্ডপের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে ডেকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা করার নির্দেশনা দিয়েছি।’
শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, ঢাকা মহানগরে এবছর ২৩২টি পূজামণ্ডপ হবে। এবার পূজায় অতিরিক্ত আলোকসজ্জা না করতে বলা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও নামাজের সময় বাজনা বন্ধ থাকবে। ভক্তরা সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পূজা করবেন। এবার অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশু ইচ্ছা থাকলেও পূজায় আসতে পারবে না। তাদের জন্য ভার্চুয়ালি অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সপ্তমী পূজার পরে ১২টা ১ মিনিটে সারা বিশ্বের করোনা রোগীদের জন্য প্রার্থনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রতিমা রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত পুরোহিত বরুণ এ প্রতিবেদককে নতুন প্রতিমা দেখান। তিনি বলেন, ‘প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধুর রং করা বাকি আছে। রং করা শেষ হলেই আগামী সপ্তাহে মন্দিরে নতুন প্রতিমা বসানো হবে। পূজার আনুষ্ঠানিকতা ২১ অক্টোবর শুরু হবে। ২৬ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জন করা হবে।’