কওমি মাদ্রাসার ‘দাওরায়ে হাদিস’কে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমমান দিয়েছে সরকার। তবে, এ সনদধারীদের সরকারি চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে নানা জটিলতা আছে। এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতকের সনদ না থাকায় তারা বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারেন না। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন অনেক কওমি শিক্ষার্থী।
তারা বলছেন, সরকার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দিয়েছে। কিন্তু এটা কোনো কাজে লাগে না। তাহলে এটা দিয়ে লাভ কী। শুধু স্নাতকোত্তর নয়, স্নাতকের মানও দেওয়া উচিত। তাহলে কওমির শিক্ষার্থীরা সব ধরনের সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘সরকার এমন মান দিয়েছে, যেটি আমাদের কোনো কাজে আসে না। আমরা বেসরকারি নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে শুরু করে বিসিএস, এমনকি কোনো কর্মচারী পদেও আবেদন করতে পারছি না। সরকার মান দিয়েছে, তিন বছর হলো। কিন্তু তিন পয়সারও লাভ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।’
যেসব চাকরির শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতকোত্তর চাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতক বা এর সমমানের সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে শুধু দাওরায়ে হাদিস সনদধারীরা কীভাবে সরকারি চাকরিসহ অন্যান্য চাকরি বা অনান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি।
গত বুধবার (১৬ জুন) কওমি মাদ্রাসাগুলোর নীতিনির্ধারণী বোর্ড আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সভা হয়েছে। এতে দাওরায়ে হাদিসের মান ও সরকারি চাকরিতে এর কার্যকারিতার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। এটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতি মো. ইসমাইল হোসেন বলেছেন, ‘সরকারি চাকরির বিষয়ে আমার কোনো জানাশোনা নেই। বিষয়টি দেখতে হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব বলেছেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে ক্লিয়ার না। এটা জটিল বিষয়। এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক না থাকলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ নেই।’