দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগে রাজধানীতে বড় ধরনের ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে তারুণ্যের অভিযাত্রায় নৌকার যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নৌকার যে অভিযাত্রা, তাতে তারুণ্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে জানিয়ে এই সমাবেশকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় সুধী সমাবেশ, বিভাগীয় সমাবেশ এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের আয়োজনে থাকবে বড় ধরনের জমায়েত। এতে থাকবে দেশ এগিয়ে যাওয়ার বার্তাও।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের যুগান্তকারী এসব উন্নয়ন-অর্জন তুলে ধরে নানা কর্মসূচি নিয়ে ভোটারদের সামনে যাবেন দলের নেতাকর্মীরা। তুলে ধরবেন গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়ন।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নৌকার যে অভিযাত্রা, তাতে তারুণ্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে, সরকারকে হটানোর যে চক্রান্ত; জঙ্গিবাদী-সাম্প্রদায়িক তৎপরতা চলছে- এর বিরুদ্ধে এই ছাত্র সমাবেশ হবে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আ.লীগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী অভিযাত্রার অংশ হিসেবে খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ করা হবে। এরপর সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে জেলা পর্যায়ে। শিগগিরই দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম এসব সমাবেশের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।
দলের দু’জন নেতা জানান, সম্প্রতি সময়ে অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তিনটা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা এবং নিজেদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব থাকলে সেগুলো দূর করা। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে হওয়া জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি, হত্যা, নির্যাতনের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা। আর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কী উন্নয়ন হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা।
এই বিষয়গুলো সামনে রেখে আগস্টজুড়ে দলের দায়িত্বশীলরা কাজ করেছেন জানিয়ে তারা বলেন, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর এ কার্যক্রম চলবে। এর মধ্যে ২ তারিখে আমাদের ঢাকা বিভাগীয় সভা হচ্ছে। এভাবে প্রতিটা বিভাগে একটি করে সভা হবে। পরে জেলা পর্যায়েও আমরা সভা করব।
এ ছাড়া, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, কক্সবাজার-দোহাজারী রেলপথ নির্মাণ, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আগারগাঁও-মতিঝিল রুটের মেট্রোরেল, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ এবং আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধন উপলক্ষেও বড় গণজমায়েত ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগ। শুক্রবারের ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে মূলত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী যে অভিযাত্রা, সেটি শুরু হবে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা আজকেও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। গণতন্ত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পথ খোলা রেখে তারুণ্যের মাধ্যমে এটা আধুনিক; স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছি। শুধু ছাত্রলীগের ৫ লাখ কর্মী অংশগ্রহণ ছাড়াও কয়েক লাখ সাধারণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।
সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বাংলাদেশে থেকে তারুণ্যের যে ঢল নামতে শুরু করেছে, তাতে এটা স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশে পরিণত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এটা আমাদের তারুণ্যের অভিযাত্রা হবে। দেশের সঙ্গে গণতন্ত্রের সঙ্গে যে শত্রুতা চলছে, দেশে বৈধ নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে; এর বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদের ধ্বনিও এখানে উচ্চারিত হবে। তারুণ্যই প্রতিবাদ করবে, লড়াই করবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যে কোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ভালো একটি নির্বাচন হবে। ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে তারুণ্যের এই অভিযাত্রা অবাধ নির্বাচনে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।