আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যেই বিশ্বের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পলক বলেন, আমাদেরকে এখন শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে মেধানির্ভর অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধাক্কা সামলাতে হলে আমাদেরকে এখনই উচ্চতর প্রযুক্তির দিকে নজর দিতে হবে। আমরা যদি প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এর নির্দেশনায় কাজ করে যেতে পারি তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বিশ্বের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, কালিয়াকৈর-এ উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেড। এ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির আওতায় বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটির পাঁচ নম্বর ব্লকে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান সামিট টেকনোপলিশ লিমিটেড কর্তৃক নির্মিত ফ্যাক্টরি ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাজ করবে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ-তাইওয়ান যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেড মূলত থ্রিএস গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেড আইপি ফোন, বায়োমেট্রিক ডিভাইস, সিকিউরিটি সিস্টেম হার্ডওয়্যার, সোলার প্যানেল এবং আইপি পিবিএক্স এর অ্যাসেম্বলিং ও মেনুফেকচারিং শিল্প স্থাপন করবে। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে সিকিউরিটি সিস্টেম সার্ভিলেন্স ও নেটওয়ার্কিং নিয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে যা পরবর্তী সময়ে ১২ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে এবং প্রথম পর্যায়ে ৩০০ জনের কর্মসংস্থান হবে বলে সামিট টেকনোপলিশ লিমিটেড সূত্রে জানানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে উৎপাদিত পণ্য প্রাথমিকভাবে ভারত, শ্রীলংকা, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপে রপ্তানি করা হবে এবং পরবর্তীতে আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে রপ্তানি করার লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করবে বলে জানিয়েছেন কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ আযম।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট। সরকার আইসিটি খাত থেকে যে বিপুল আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা পূরণে এই পার্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৮২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাবনা পাওয়া গেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৩৮ হাজার জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪টি প্রণোদনা সুবিধা দিচ্ছি। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ অনলাইন ভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনু্ষ্ঠানে আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, সামিট টেকনোপলিশ লি. ও কোয়ার্টজ ম্যানুফেকচ্যারিং লি. এর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা/ফিরোজ