ওপেন সোর্স হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কোম্পানি এবং পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ডেভেলপমেন্ট বোর্ড প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘আরডুইনো। শনিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে এক অনলাইন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
উল্লেখ্য, আরডুইনো ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান কোড১৯, বাংলাদেশভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এবং আইওটি ফর বাংলাদেশ এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেসিক আরডুইনো এবং আইওটি কার্যকারিতা নিয়ে ৬০ জন গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং এই মুহূর্তে তারা আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন অর্জনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে আইওটি ডিভাইস তৈরির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলা ভাষায় আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশনের ব্যবস্থা, মাস্টার ট্রেনারদের প্রশিক্ষণ সহায়তা, আন্তর্জাতিক মানের আইওটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা এবং আরডুইনো স্কুল কার্যক্রম প্রতিষ্ঠা অব্যহত থাকবে।
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আরডুইনো’ এর কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘যেই মুহূর্তে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ডিজিটাল ইনোভেশন ইকোসিস্টেম তৈরি করতে আজকের এই পদক্ষেপ এই গতিকে আরো প্রভাবিত করবে। এই উদ্যোগ আরডুইনো এর মতো বিশ্বজনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্মকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় এনে দেবে।’
আরডুইনোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিটিও ডেভিড কুয়ার্তিলেস বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘আরডুইনোর প্রতি আস্থা রেখে বাংলাদেশে আরডুইনো শিক্ষার এই আনুষ্ঠানিক যাত্রা প্রশংসনীয়। আরডুইনো যেকোনো জটিল প্রযুক্তিকে সকলের জন্য সহজ বোধগোম্য করতে সাহায্য করে। আমাদের কাছে এটা পরিষ্কার যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষকে প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে সাহায্য করে। আর তাই আরডুইনো এর আজকের এই আনুষ্ঠানিক যাত্রা বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানীকারক দেশ হিসবে প্রতিষ্ঠিত করতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সাহায্য করবে।’
আরডুইনোর সার্টিফিকেশন প্রোগ্রামে এখন থেকে যুক্ত হয়েছে বাংলা ভাষা। অর্থাৎ বিশ্বের আর আটটি ভাষার সঙ্গে বাংলাভাষাতেও এই কারিগরি সনদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে বলে জানান, ডেভিড কুয়ার্তিলেস।
আরডুইনোর প্রো/আইওটি বিজনেস ডেভেলপার মাসিমো স্যাখ্যি বলেন, ‘কোড-১৯ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আরডুইনো এর যাত্রা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমি অনেক উৎসাহী। আরডুইনো একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম যা পৃথিবীর বিভিন্ন মার্কেটে কাজ করে। আমি আরডুইনোকে ঘিরে বাংলাদেশের এই আগ্রহকে সাধুবাদ জানাই এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন ও পেশাভিত্তিক আরডুইনো এর বাস্তবিক প্রয়োগ নিয়ে সকলের মাঝে এই আগ্রহ দেখে আনন্দিত।’
আইওটি ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইমরান মো. আমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাঝে রোবটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস প্রভৃতি বিষয়ে ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরডুইনো এর এই যাত্রা দেশকে আরো সম্ভাবনাময় এবং সমৃদ্ধ করে তুলবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু কোড লেখার জন্য আমাদের আঙুলের ব্যবহারই যথেষ্ট নয়, কাজে লাগাতে হবে হাত দুটোকেও। হার্ডওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে খুঁজতে হবে নতুন সম্ভাবনা। আমি আজ অত্যন্ত আনন্দিত যে, আরডুইনো এর মতো আন্তর্জাতিক কার্যক্রম বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় চালু হয়েছে, এতে করে দেশের সব স্তরের শিক্ষার্থীরা আরডুইনো শিক্ষায় আরো বেশি আগ্রহী হবে।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।