সম্প্রতি চীনে অনুষ্ঠিত চেংদু-ছংছিং বৈদেশিক শিক্ষার্থী অর্থনৈতিক বৃত্ত (Chengdu-Chongqing Economic Circle Competition for International students) প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন ওয়ালটনের সাবেক প্রকৌশলী ও গবেষক ড. মো. ড. আলতাব হোসেন।
উদ্ভাবনী প্রকল্প ‘স্মার্ট চায়না শিক্ষক’ (Smart Chinese Teacher) নামের চায়না ভাষা শিক্ষার ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রোগ্রাম তৈরি করে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। এ প্রকল্পে তিনি সর্বাধিক নম্বর ৯৬.৬২ (১০০-এর মধ্যে) অর্জন করেন।
প্রতিযোগিতাটি দুই মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্বের ৬০টি দেশ থেকে ১০৮টি প্রোজেক্ট জমা পড়ে। সেখান থেকে ১৪টি প্রোজেক্ট চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ১১ ও ১২ তারিখে আন্তর্জাতিক বিচারক প্যানেলের উপস্থিতিতে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘স্মার্ট চায়না শিক্ষক’ প্রোজেক্টটি সর্বাধিক নম্বর ৯৬.৬২ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রোজেক্টটি বিচারক ও দর্শকমণ্ডলীর কাছে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্যতা পায়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক মণ্ডলীর সামনে ‘স্মার্ট চায়না শিক্ষক’ উপস্থাপন করেন ড. আলতাব হোসেন নিজেই। সেসময় তার দলের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
চীনের ছংছিং শহরে- ছংছিং মিউনিছিপাল ব্যুরো অব হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি, ছংছিং মিউনিসিপ্যাল শিক্ষা কমিশন, ডিপার্টমেন্ট অব হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি অব সিচুয়ান প্রোভিন্স, সিচুয়ান প্রদেশ শিক্ষা শাখাসহ অন্যান্য শাখার তত্ত্বাবধানে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করে ছংছিং হাইটেক অঞ্চলের প্রশাসন ও চায়না পার্টি ওয়ার্কিং কমিটি।
‘স্মার্ট চায়না শিক্ষক’ (cnpinyin.com)-এর উদ্ভাবক বাংলাদেশি গবেষক ড. আলতাব হোসেন জানান, ‘স্মার্ট চায়না শিক্ষক’ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাবহারকারী ও শিক্ষার্থীরা সহজে চায়না ভাষা শিখতে পারবেন। বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম (গ্রামার, ডিকশনারি, শব্দ ও বাক্য ভাণ্ডার, বিভিন্ন পরীক্ষা ও অন্যান্য) উদ্ভাবনীর মাধ্যমে বর্তমানে প্লাটফর্মটি চায়না ভাষা শিক্ষার জন্য চীনসহ সারাবিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি ও প্রশংসা পেয়েছে।
চায়না ভাষা শিক্ষার জন্য বর্তমানে প্লাটফর্মটি অনেক শিক্ষার্থী বিনামূল্যে ব্যবহার করছেন। এটি খুব দ্রুত শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। প্লাটফর্মটি বর্তমানে চায়নার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা অর্জন করেছে বলে জানান ড. আলতাব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এবারের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দলের উদ্ভাবনী চিন্তাধারা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, দর্শক সমর্থন, ও দলের ভিত্তি আরও মজবুত হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রথম স্থান অর্জন বিদেশের মাটিতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করেছে। এ অর্জন আমার, বিশ্ববিদ্যালয়, উদ্যোক্তা ও টিম প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বড় সাফল্য।’
ড. আলতাব হোসেন ইউনিভার্সিটি অব ইলেক্ট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না থেকে মাস্টার্স শেষ করে সদ্য পিএইসডি ডিগ্রিও শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
তিনি এর আগেও বেশ কয়েকবার চীনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব ইলেক্ট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়নার বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধি হিসেবে দুবার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ আন্তর্জাতিক সঙ্ঘের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ড. আলতাব হোসেন কর্মজীবনে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন গ্রুপ-এর গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকৌশলী এবং চায়না অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভবিষ্যতে চীন ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও সাফল্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।