ফুটওয়ার্ক, হ্যান্ড আই কোর্ডিনেশন ও বোলার নির্বাচন
ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে ফুটওয়ার্ক। এটা সাধারণত আমরা স্পিনারদের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার করে থাকি। তখন দেখা যায় সেই বোলার সঠিক লেন্থ খুঁজে পায় না। কিছু সময় শর্ট বল কিছু সময় হাফ ভলি বল ক্রতে বাধ্য হয়। বা কোথায় বল করবেন ভাবতে থাকেন। আর তাই স্পিনারদের ক্ষেত্রে ফুটওয়ার্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ আর এটা কাজেও লাগে। পেস বোলিংয়ে ফুটওয়ার্কের পাশাপাশি ভারসাম্য থাকাটা খুব জরুরী। ফুটওয়ার্কে যে সুযোগটা পাওয়া যায়, ব্যাটসম্যানকে বলের কাছে নিতে সুবিধা করে, বেশি শট করার সুযোগ সৃষ্টি করে, শট করতে সুবিধা হয়।
আগেকার সময় ব্যাটসম্যানদের ফুটওয়ার্কের উপর অনেক বেশি নজর দেওয়া হতো। দেখা যেত, তারা বিশাল ফুটওয়ার্কে ব্যাটিং করছে। কোচরাও সেদিকে বিশেষ নজর দিতো। কারণ, এখন উইকেট যেমন ফ্ল্যাট আগে কিন্তু তেমন ছিল না। আগে বলতে যখন থেকে সাদা বলের ক্রিকেট বেশি জনপ্রিয় হতে লাগলো তার আগে পর্যন্ত। তখনো বোলাররা উইকেট থেকে অনেক বেশি পরিমাণে সাহায্য পেত। উইকেটের দুইপাশে সুইং পেত মাঠের সহায়তায়। স্পিনাররাও অনেক বেশি সহায়তা পেতো উইকেট থেকে। আর তাই ব্যাটসম্যানরা বলের কাছে গিয়ে খেলতেন। যাতে বলে সুইং বা স্পিন না পায়। প্রয়োজনে এগিয়ে এসে খেলতেন। আর এখন ব্যাটসম্যানরা ব্যাকফুটে গিয়ে জায়গা করে নিয়ে খেলতে পছন্দ করেন। কারণ, উইকেট অনেক ফ্ল্যাট হয়ে গেছে।
আর তাই এখন ভালো ব্যাটিং সেন্সের পাশাপাশি, হ্যান্ড আই কোর্ডিনেশন ভালো হলেই কিন্তু রান করা সহজ হয় অনেক। তবে ভালো ভালো ব্যাটসম্যানরা কিন্তু এখনো ফুটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকে। যেমন, বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স এরা কিন্তু ফুটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকে। যদিও ফ্ল্যাট উইকেটে এটা খুব প্রয়োজন না, তবে বড় খেলোয়াড় হতে গেলে এটা জরুরী। তাহলে আপনার ধারাবাহিক রান করতেও সুবিধা হবে। আমি নতুনদের বলবো, যারা ক্রিকেট খেলতে চায় তারা যেন অন্যান্য বেসিকের পাশাপাশি ফুটওয়ার্কের দিকেও ভালোভাবে নজর দেয়।
ব্যাটসম্যানদের বোলার নির্বাচন করার গুণ থাকতে হবে। দেখা যায়, যেকোন দলে প্রধানত পাঁচজন বোলার থাকে। দেখা যায়, সেখানে দুইজন বোলার খুব বেশি ভালো করছে। তখন তাদের দেখে শুনে খেলে বাকী তিনজন থেকে রান আদায় করে নেওয়ার পরিকল্পনা থাকতে হবে। আবার কিছু কিছু দলে বিশেষ বোলার থাকে, যাদের নিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা থাকার দরকার। সবমিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের অবশ্যই একটা গেমপ্ল্যান থাকা উচিত। আগের দিন প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভেবে নেওয়া উচিত। প্রতিপক্ষের কোন বোলারকে কিভাবে ফেস করবো, এটা জানা উচিত। আবার কোনো দলের ভালো বোলারকে আমি খেলবো না, রান করবো না। বিষয়টা কিন্তু তা নয়। নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে। নেগেটিভ মনোভাব থাকলে খেলার ক্ষতি হয়। আর তাই প্রতিপক্ষের ভালো বোলারদের দেখেশুনে খেললেও কিন্তু রানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর অবশ্যই দলের পাশাপাশি নিজের ব্যাটিং পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রতিটা বোলারের শক্তি এবং দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে।
(চলবে)
অনুলিখন: ইয়াসিন হাসান