খেলাধুলা

স্পিন নাকি পেস, কী কৌশল সাজাচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

নিষ্প্রাণ উইকেট হলেও প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার চোখে চোখ রেখেই লড়াই করেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাশের ব্যাটিং এবং তাসকিন আহমেদের বোলিং। দ্বিতীয় টেস্টও হবে ক্যান্ডির পাল্লেকেল্লে স্টেডিয়ামে, তবে উইকেটের চেহারা ভিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টেস্টের জন্য বাঁহাতি আন-অর্থোডক্স বোলার লাকশান সান্দাকানকে ফিরিয়ে এনেছে, তা থেকে অনুমান করা যায় উইকেটে টার্ন থাকবে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও সান্দাকানের সহায়ক স্পিনিং উইকেট থাকতেও পারে। কিন্তু আমার মনে হয় এটি ভুল সংকেতও হতে পারে।

শ্রীলঙ্কা টেস্টটি জিতে সিরিজ জয়ের সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। সেই ক্ষেত্রে পেসি-বাউন্সি স্পোর্টিং উইকেট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অনেকটা এজন্যই চোটগ্রস্ত লাহিরু কুমারার পরিবর্তে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলো ছড়ানো আসিতা ফার্নান্ডোকে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশকে তিন পেসার নিয়েই আক্রমণ সাজাতে হবে।

ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কারণ আছে। তামিম দুই ইনিংসে নিজের আক্রমণাত্মক ফর্মে খেলেছেন। সাইফ হাসানকে নিয়ে একটু শঙ্কা থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই ইনিংসে দুটি ভালো বলে উইকেট হারিয়েছেন। তরুণ খেলোয়াড়, তাকে অন্তত আরও একটি সুযোগ দেওয়া উচিত। সাইফ খেললে ওপেনিংয়ে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন থাকবে। যদিও প্রথম ইনিংসে তিন নম্বরে শান্ত চমৎকার খেলেছেন, কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাটিং ইউনিটে মুশফিকের চার নম্বরে ব্যাটিং করা উচিত।  সেক্ষেত্রে সুপারিশ করবো মুমিনুল, মুশফিকের পর পাঁচ নম্বরে শান্তকে খেলানোর। দ্বিতীয় ইনিংসে সুরাঙ্গা লাকমলের বলে শান্তর আউট হওয়ার ধরন থেকে মনে হয়েছে পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলে তার থেকে মুমিনুল, মুশফিক টপ অর্ডারে খেললে ভালো হবে।

উইকেট বিবেচনায় তিন পেসার ও দুই স্পিনার খেলাই যুক্তিযুক্ত হবে। তবে সেই ক্ষেত্রে শরিফুল ইসলামকে সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে ভাবা যেতে পারে। তিনি বাঁহাতি দ্রুতগতির বোলার। তাসকিনের সঙ্গে নতুন বলে চমক দেখাতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে ইবাদত হোসেন বা আবু জায়েদ রাহীর মধ্যে কাকে বিশ্রাম দেওয়া হবে সেটা টিম ম্যানেজমেন্ট বিবেচনায় নিতে পারে।

অনেক বিবেচনার পর শুভাগত হোমকে দলে নেওয়া হয়েছে সাকিব আল হাসানের বিকল্প বিবেচনায়। প্রথম টেস্টে সাকিবের অনুপস্থিতি অন্তত বোলিংয়ে দারুণভাবে অনুভূত হয়েছে। আমি শুভাগতকে দলে নেওয়ার কোনও সুযোগ দেখি না।

বাউন্সি উইকেট হলে নাঈম ইসলাম কার্যকরী হতে পারেন। নাঈম বাটটিংটাও মন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে তাকে তাইজুলের পরিবর্তে বিবেচনার সুযোগ থাকলেও অনেকটা নিশ্চিত যে সার্বিক বিবেচনায় তাইজুলই খেলবেন।

বাংলাদেশকে শুধু ভালো ব্যাটিং করলেই হবে না। ভালো বোলিং, ফিল্ডিং করে শ্রীলঙ্কা দলের ২০টি উইকেট তুলে নিতে হবে। ফাস্ট বোলারা যুগল বন্দি হয়ে উইকেট শিকার করতে হবে। তাসকিন প্রথম টেস্টে অনেকটা একাই শ্রীলঙ্কা দলকে বিচলিত করেছিলেন। তাতে তাসকিন, শরিফুল, ইবাদত- তিন জনকে নিয়ে আক্রমণ সাজানো যেতে পারে। এই উইকেট রাহীর মতো সুইং বোলারের উপযোগী নয়। 

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সমান সুযোগ শেষ ম্যাচটি জিতে সিরিজ জয় করার। টস ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। আগে ব্যাটিং করা দল বাড়তি সুবিধা পাবে। আশা করি, পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ।

লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্রিকেট লেখক।

আরও খবর..

নিষ্প্রাণ উইকেট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে