খেলাধুলা

স্নায়ু স্থির রেখে আসলো অবিস্মরণীয় জয়

অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। অল্পের জন্য হোয়াইটওয়াশ থেকে রক্ষা পেয়েছে অজিরা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে। টানা তিন ম্যাচ হেরে ঘাম ঝরানো জয় পায় চতুর্থ ম্যাচে। তবে শেষটা রাঙায় বাংলাদেশ। ৬০ রানের বিশাল জয়ে বিজয়ের পতাকা উড়ায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।   

টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানালেন, স্নায়ু স্থির রেখে এমন ঐতিহাসিক-অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছেন তারা। সোমবার মিরপুরে শেষ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘বোলাররা অনেক ভালো করেছে। এই কৃতিত্ব তাদের। আমার মতে উন্নতিটা ভালো হয়েছে। যদি জিম্বাবুয়ে ও এই সিরিজের দিকে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন তারা তাদের স্নায়ু শান্ত রেখেছে খুব ভালোভাবেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শান্ত থাকতে হবে এবং দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।' 

শেষ ম্যাচটাও হয়েছে লো স্কোরিং। বাংলাদেশের দেওয়া ১২৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়া অল আউট মাত্র ৬২ রানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি অজিদের সর্বনিম্ন রান। এর আগে ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের ৭৯ রান করেছিল তারা। 

সাইফ উদ্দিনের মিডিয়াম পেস আর সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে শেষ দিকে চোখে ষর্ষে ফুল দেখে অজিরা। শেষ ৫ উইকেট তারা হারায় মাত্র ১৯ বলে। এ সময় স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৯ রান। এ সময়ে সাকিব নেন তিনটি, সাইফ উদ্দিন দুটি। সাকিব সর্বসাকুল্যে ৩.৪ ওভারে ৯ রানে নেন ৪ উইকেট। শরিফুলের পরিবর্তে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সাইফ উদ্দিন ৩ উইকেটে দ্যুতি ছড়ান। নিশ্চিতভাবেই সাকিব হয়েছেন ম্যাচসেরা। ১১৪ রান ও ৭ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কারটাও পেয়েছেন তিনি। 

নিজের দল নিয়ে মাহমুদউল্লাহ অনেক খুশি। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেন, 'ছেলেদের নিয়ে আমরা অনেক খুশি। টিম ম্যানেজম্যান্ট আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। ছেলেরা জয়ের ক্ষুদা দেখিয়েছে। আমরা আমাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছি। আমরা আমাদের স্নায়ু রেখেছি।'  

৫ ম্যাচ সিরিজের প্রতিটা ম্যাচেই বোলিংয়ে শুরুতেই সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। কখনো মেহেদী, কখনো নাসুম কিংবা সাকিব বল হাতে দেখিয়েছেন জাদু। পেসে মোস্তাফিজ দেখিয়েছেন অনবদ্য পারফরম্যান্স। তার স্লোয়ার-কাটারে রীতিমত ভুগেছে অস্ট্রেলিয়া। শরিফুল ছিলেন অনেক কার্যকর। আর শেষ ম্যাচে সাইফ উদ্দিন সুযোগ পেয়েই দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। 

বাঁহাতি স্পিনার নাসুম সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নিয়েছেন। সাকিব, মোস্তাফিজ, শরিফুল নিয়েছেন সমান ৭টি করে উইকেট। বোলারদের নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘এই সিরিজের আগে আমি বোলারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যেভাবে প্রতিটা খেলায় চিন্তাভাবনা করেছে এটা সন্তুষ্টির বিষয়। আমরা আমাদের কন্ডিশনে কোনো কিছু ছেড়ে দিতে পারি না; কারণ আমরা ঘরের মাঠে ভালো দল। আমাদের দলের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভালো সম্ভাবনা আছে কিন্তু র‌্যাংঙ্কিংয়ে এটা প্রকাশ করে না।' 

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ এ বছর কোনো সিরিজই হারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই দিয়ে শুরু, এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়। মাঝে নিউ জিল্যান্ডে কেটেছে হতশ্রী সময়। এ ছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের মাটিতে সব ফরম্যাটে সিরিজ জয়ের পর এবার অস্ট্রেলিয়াকে বধ করলো বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহতো বলতেই পারেন এই দল নিয়ে সম্ভাবনার কথা!