স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ম্যাচ শেষ। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থেকে বের হলো ভারতীয় দর্শকদের মিছিল। সেই অগণিত ভক্তের মধ্যে থেকে নজর কেড়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির পাগল ভক্ত রাম বাবু। পুরো শরীর যেন ধোনিময়। কাছে গিয়ে সময় চাইতেই হাসি দিয়ে বললেন, ‘হো যায়েগা ভাইয়া।’
মাত্র ৬.৩ ওভারে জিতে গেছে ভারত। রান রেটে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালের আশা এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে। ভারতীয় ভক্তদের মনে আনন্দের সঙ্গে আছে অজানা শঙ্কাও, রামের মনেও। তবে জয়ের পর উদযাপনই হয়ে যায় মুখ্য। তাই রামও ভবিষ্যতের অজানা আশঙ্কাকে দূরে ঠেলে অতীত ও বর্তমান নিয়েই থাকলেন।
হাজারো ভক্তদের সেলফি তোলার ভিড়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে রাম শুধু কথাই বলেননি, অংশ নিয়েছে ফেসবুক লাইভেও। তবে তাড়াহুড়োর কারণে বেশিক্ষণ লাইভে থাকতেও পারেননি। তার মধ্যে একটু জানিয়ে রাখি, ভারতের চণ্ডীগড়ে জন্ম নেওয়া রাম বাংলাদেশে এসেছিলেন দুইবার, একবার ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। আরেকবার ২০১৬ এশিয়া কাপে।
২০১৪ সালে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে ধোনির সহায়তায় দ্রুত দেশে ফিরে চিকিৎসা করেন। আগেভাগে রাম দেশে ফিরে গিয়েছিলেন, ভারতও আর চ্যাম্পিয়ন হয়নি। পরেরবার যখন এশিয়া কাপের জন্য আসেন, সেবার অবশ্য ঠিকঠাকই ছিলেন। ২০১৪ সালের সেই দুঃসহ স্মৃতি কি মনে আছে?
রামের এখনো সেই কষ্টের স্মৃতি এখনো দগদগে। ধোনি না এলে আসলে খারাপ কিছু হয়ে যেত বলে তিনি জানান, ‘হঠাৎ করে জ্বর হলো। ভেবিছিলাম সেরে যাবে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ধোনি স্যার না এগিয়ে আসলে খারাপ কিছু হতো। আমি চলে আসি সেমিফাইনালের আগেই। ভারত ফাইনালে হেরে যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় আমাকে।‘
রামের বন্ধু বাংলাদেশের আরেক ভক্ত টাইগার শোয়েব আলী। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ এক সঙ্গেই দেখেছিলেন। বাইরে এসে কথা বলতে গিয়ে জানালেন, এবারের বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দ্রুত বাদ হওয়ায় খারাপ লেগেছে তার। জানালেন নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মাঠে বসে দেখার কথা।
‘বাংলাদেশ বিশ্বকাপ থেকে বের হয়ে গেছে, আমাদেরও সুযোগ মাত্র একভাগ (সেমিফাইনালে যাওয়ার)। তো আমি চাই ভারত এখন এগিয়ে যাক। যদি ভারত সেমিতে যেতে পারে তাহলে আমরাই ফাইনালে জিতব।’- এভাবেই বলছিলেন রাম।
স্কটলল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৫ রানের টার্গেট ভারত ৬.৩ ওভারে অর্থাৎ ৩৯ বলেই ছুঁয়ে ফেলে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ভারত ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৮২। এই জয়ে নেট রান রেটে আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছেন কোহলি-রোহিতরা। ৪ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। রান রেট ১.৬১৯। আফগানিস্তানের পয়েন্ট সমান ৪। তাদের রান রেট ১.৪৮১।
এই জয়েও ভারতের সেমিফাইনাল নিশ্চিত না। অপেক্ষা করতে হবে নিউ জিল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচের ফলের দিকে। কিউইরা যদি হেরে যায় তাহলে ভারতের সেমির দরজা খুলবে নামিবিয়ার বিপক্ষে জিতলেই। আর নিউ জিল্যান্ড জিতে গেলে তাহলে ভারতের কোনো পথই খোলা থাকবে না। ধরতে হবে দেশের বিমান।
আফগানিস্তানের কাছে আকুতি জানিয়ে রাম বলেন, ‘আফগানিস্তানকে বলতে চাই, নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে দাও বন্ধু। এই ম্যাচ হারাতে পারলেই আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারব। আমরা সেমিফাইনাল খেলতে পারব আর ফাইনালের সুযোগ মিলে যাবে আমাদের। ভারত এখন ফর্মে এসেছে।’
রামের আকুতি কি শুনতে পাচ্ছেন রশিদ খানরা?