খেলাধুলা

ফাইনালের নায়ক মার্শের ‘বিহ্যাইন্ড দ্য স্টোরি’

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নায়কের নাম মিচেল মার্শ। তার অনবদ্য ৭৭ রানের ইনিংসে বিশ্বকাপ ফাইনাল নিজেদের করে নেয় পাঁচবারের ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নরা।

মার্শ রাতারাতি নায়ক হননি। তার নায়ক হওয়ার পেছনে ‘বিহাইন্ড দ্য স্টোরি’ রয়েছে। যে স্টোরি শুরু মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচটি করে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। অস্ট্রেলিয়ার প্রায় সব সিনিয়ররাই বিশ্বকাপের আগে ফুরফুরে থাকতে দুটি সিরিজ থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নেন।

ফিঞ্চ, ওয়ার্নার, স্মিথ, কামিন্সরা ছিলেন সেই তালিকায়। অথচ দল গোছানোর আগে কোচ জাস্টিন লাঙ্গার একটা মেসেজ পান, ‘আই অ্যাম অ্যাভেইলেভেল ফর বোথ ট্যুর।’ মার্শের মোবাইল থেকে আসা সেই মেসেজে লাঙ্গার যেন স্বস্তি পান।

দলের সঙ্গে সফরে বেরিয়ে যান মার্শ। প্রথমত, নিজের জায়গা পাকা করতে। দ্বিতীয়ত, ধারাবাহিক টি-টোয়েন্টি খেলতে। লাঙ্গার তখনই তাকে জানিয়ে দেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও বিশ্বকাপে তাকে তিনে ব্যাটিং করতে হবে। মার্শ যেন সব পেয়ে যান তখনই। এরপর চললো তার পাঁচ মাসের দীর্ঘ সফর।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে জুলাইয়ে সফর করেছিল অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে মার্শের রান ২৩০। যেমনটা চেয়েছিলেন তেমনটাই হয়েছিল। ক্যারিবীয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে অস্ট্রেলিয়া সরাসরি উড়াল দেয় বাংলাদেশে। সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারলেও মার্শের ব্যাট জ্বলেছিল ঠিকই। পাঁচ ম্যাচে রান ১৫৬। ধীর গতির, নিচু, অসমান ও স্পিন বান্ধব উইকেটে মার্শের রান কম হলেও তার অ্যাপ্রোচ ছিল প্রশংসনীয়।

সেই অ্যাপ্রোচেই এবার বিশ্বকাপের নায়ক তিনি। ফাইনালে তাদের লক্ষ্য ছিল ১৭৩। ফিঞ্চ দ্রুত আউট হয়ে গেলে মার্শকে নামতে হয়। নেমে প্রথম বলেই ছক্কা। কিউই পেসার অ্যাডাম মিলনে রীতিমত থতমত। এভাবেও কেউ আক্রমণে যায়!

এরপর মার্শ ২২ গজে স্রেফ কিউই বোলারদের শাসন করলেন। ৫০ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ৪ ছক্কার মার। বিশ্বকাপ জিততে এমন ইনিংসেরই তো প্রয়োজন। নাকি?

পুরস্কার নিয়ে মার্শ কথা বলতে পারছিলেন না। তবুও নিজের আবেগ লুকিয়ে বলেন, ‘আমার সত্যিই বলার মতো কোনো ভাষা নেই। ছয় সপ্তাহ দারুণ সময় কেটেছে এই দলটার সঙ্গে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাদের ভালোবাসবো। আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কোচিং স্টাফ আমার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এসে জানায়, আমাকে তিনে ব্যাটিং করতে হবে। আমি তাদের অফার লুফে নেই। তাদের ধন্যবাদ আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য।’