ভারতের বিপক্ষে খেলায় আপনি ভিন্ন কিছু করলে নজরে আসবেনই। যেমন সেঞ্চুরি কিংবা ৫ উইকেট পেলে আপনাকে নিয়ে বাড়তি হইচই থাকবে। আবার প্রতিশ্রুতিশীল কোনো ইনিংস কিংবা দুর্দান্ত বোলিং স্পেলে আপনি নজর কাড়তে পারবেন। আবার ব্যতিক্রম কিছু করলেও আপনি অন্য সবার থেকে আলাদা হতে পারেন। ইবাদত হোসেন তেমনই এক কাণ্ড ঘটিয়ে নজরে এসেছিলেন।
কলকাতার ইডেন টেস্টের ঘটনা। বিরাট কোহলি গোলাপি বলের টেস্টে পেলেন প্রথম শতক। এরপর তার দ্যুতি অব্যাহত ছিল। ১৩৬ রানে তাকে থামান ইবাদত হোসেন। কোহলির উইকেট নেওয়ার পর নিজের ট্রেডমার্ক উদযাপন করতে ভুল করেননি ইবাদত। স্যালুট দিয়েছিলেন মাঠেই। কিন্তু তার স্যালুটকে ‘সেন্ড অফ’ ভেবে ইবাদত ও অধিনায়ক মুমিনুলকে ডেকেছিলেন দুই আম্পায়ার জো উইলসন ও মারাইস এরাসমাস। মুমিনুল হক পরে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করেন দুই আম্পায়ারকে।
সেই গল্প শোনালেন ইবাদত, ‘আমি আমার উদযাপন করেছিলাম। আম্পায়াররা ভেবেছিলেন আমি সেন্ড অফ করছি। তাই আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন আমি স্যালুট দিয়েছি। অধিনায়ক মুমিনুল ভাইকেও ডেকেছিলেন আম্পায়াররা। আমরা দুজন উনাদের বোঝাতে পারি যে, এটা আমার ট্রেডমার্ক উদযাপন।’
এর আগে পরে ইবাদত অনেকবারই স্যালুট দিয়েছেন। তবে মাউন্ট মঙ্গানুইতে ছিল স্যালুটের ফুলঝুরি। ইবাদত একের পর এক উইকেট পাচ্ছেন, স্যালুট দিচ্ছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ছয়টি, প্রথম ইনিংসে একটি। সব মিলিয়ে ৭ উইকেটে তার ৭ স্যালুট। তাতে ইতিহাসের পাতায় নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন পেয়েছেন ‘অমরত্বের’ স্বীকৃতি।
ডানহাতি পেসারের স্যালুটের পেছনে রয়েছে ছোট্ট গল্প। সেই গল্পও শোনালেন ইবাদত, “প্রথম শ্রেণির ম্যাচে অভিষেক হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিলাম। উনি আমাকে বললেন, ‘পেসারদের ভেতরে তেজ থাকতে হয়, তুই একটা ট্রেডমার্ক উদযাপন বের কর।’ আমি বিমানবাহিনী থেকে ক্রিকেটে এসেছি উনি জানতেন। পরামর্শ দিলেন পরবর্তীতে উইকেট পেলে স্যালুট দিতে। আমি জানতাম কিভাবে স্যালুট দিতে হয়। উনি আমাকে বুদ্ধিটা দিলেন। এরপর উইকেট পেলে স্যালুট করে উদযাপন করি।’
ক্রিকেটের আগে নিয়মিত ভলিবল খেলতেন ইবাদত। সেটা পেশাগত কারণে। বিমানবাহিনীতে তার চাকরি হয় ভলিবল খেলার কারণে। তবে ক্রিকেটই তার প্রথম পছন্দ ছিল সবসময়। পেসার হান্ট থেকে উঠে আসার পর ক্রিকেটকেই ধ্যানজ্ঞান বানিয়েছেন। থিতু হয়ে এখন এই অঙ্গনে সেরা হতে চান। চলুক ইবাদতের স্যালুট। তার স্যালুট চললে হাসবে বাংলাদেশ, জিতবে বাংলাদেশ।