শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর দুই দিন আগেও সাকিব আল হাসানের খেলা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। দলে থাকলেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুরুতেই দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেননি। পরে নেগেটিভ হয়ে দলে যোগ দেন। রাসেল ডমিঙ্গো জানালেন ফিট সাকিবকেই তিনি দলে চান। নানা নাটকীয়তার মাঝে প্রথম টেস্টের আগের দিন মাত্র ৩০ মিনিট অনুশীলন করে নেমে পড়েন মাঠে!
সাকিব যেন এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন। মাত্র আধঘণ্টার প্রস্তুতিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলা যায়? তাও আবার করোনামুক্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই! কীভাবে সম্ভব হয়েছে এটা? ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিন (বৃহস্পতিবার) শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানান, একটু ‘ক্যালকুলেটিভ’ সুযোগ নিয়েই বাজিমাত করেন তিনি।
সাকিব বললেন, ‘প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আমি প্রিমিয়ার লিগে চারটা ম্যাচ খেলে গিয়েছিলাম। ওই জিনিসটা আমাকে সাহায্য করেছে। আমি জানতাম চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দুদিন আমার জন্য খুব কষ্টকর হবে। তারপর আস্তে আস্তে সহজ হয়ে যাবে। একটু সুযোগ নেওয়া বলতে পারেন। সুযোগটা ক্যালকুলেটিভই নেওয়া।’
আগাম প্রস্তুতির জন্য সাকিব প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঢাকা লিগ খেলেন। তার দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব সুপার লিগ উতরাতে না পারলে দলই পরিবর্তন করে খেলেন। গরমের ভেতর খেলা চার ম্যাচ ভীষণ কাজে দিয়েছে তাকে। তবুও প্রথম দুদিন কিছুটা ভুগলেও সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন।
সাকিবের পারফ্যান্সই এটা প্রমাণ করে। চট্টগ্রাম টেস্টে ৬৪ ওভার বোলিং করে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ঢাকা টেস্টে ৪০.১ ওভার বোলিং করে নেন ৫ উইকেট। ৪ বছর পর ফাইফার পেলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। মোট ১০৪.১ ওভার বোলিং করেছেন তিনি!
ব্যাট হাতে অবশ্য বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে হয়নি। চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ২৫ রান করেন, দ্বিতীয় ইনিংসে নামতে হয়নি। আর ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে নামার সুযোগ এখনও আসেনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফিটনেস নিয়ে আলাদা কাজ শুরু করেছিলেন সাকিব। বিসিএল খেলতে সিলেট উড়ে যাওয়ার সময় নিয়ে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ট্রেনার। সুযোগ পেলেই তার সঙ্গে কাজ করেছেন। ফিটনেসের দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা না গেলেও তিনি সেরাটাই দিচ্ছেন। তা আরও স্পষ্ট চট্টগ্রাম টেস্টে।
সাকিবের মতে ফিজিক্যালি ফিট আর ম্যাচ ফিট দুটা আলাদা ব্যাপার, ‘ম্যাচ ফিট আর ফিজিক্যালি ফিট দুইটা দুই ধরনের সংজ্ঞা। অনেকেই আছে ম্যাচে টানা অনেক ওভার বোলিং করতে পারে ৬-৭-৮ ওভার ফাস্ট বোলার। কিন্তু বিপ টেস্টে দেখা যাচ্ছে ১০ পর্যন্ত ক্রস করছে না। আবার অনেকে অছে বিপ টেস্টে ১২-১৩ দেয়, কিন্তু ৫ ওভারও করতে পারে না। আসলে ফিটনেসের সংজ্ঞা একেক জায়গায় একেক রকম। ম্যাচ ফিট আর ফিজিক্যাল ফিটনেস দুইটা দুই ধরনের জিনিস।’