টেস্টে সময়টা ভালো যাচ্ছে না অধিনায়ক মুমিনুল হকের। মাঠে নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সঙ্গে রান খরায় আছেন দেশের একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার তকমা পাওয়া মুমিনুল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হারের পর মুমিনুল প্রসঙ্গটি আরও জোরালোভাবে সামনে আসে।
শুক্রবার (২৭ মে) বিকেলে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মুমিনুলের কি চিন্তা করছে সেটা জানার অপেক্ষায় আছেন তারাও।
বিসিবি সভাপতির দিকে প্রশ্নটা ছিল এমন, মুমিনুল ফর্মে নেই আবার অধিনায়ক, এর আগে মাশরাফির ক্ষেত্রেও আমরা দেখেছি বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স করতে পারেনি, অফ ফর্মে থাকলে নেতৃত্বের ওপরও একটা বড় চাপ আসে, সেক্ষেত্রে বিসিবি কি ভাবছে?
নাজমুল বলেন, ‘একটা অধিনায়ক যখন রান করতে পারে না ওর উপর চাপটা কিন্তু আরও অনেক বেশি। আমার ধারণা মুমিনুল প্রচণ্ড মানসিক চাপে আছে। আজ আমার সাথে সংক্ষিপ্ত আলাপ হয়েছে, আমি ওকে বলেছি কাল অথবা পরশু ওর সাথে বসব। একটু খোলেমেলা কথা বলে দেখি ওর মাথায় কি আছে, ও কি চিন্তা করছে।’
টেস্টে অধিনায়কত্বটা মুমিনুলের কাছে আসে হঠাৎ করে। গ্রহণের জন্য বলতে গেলে প্রস্তুত ছিলেন না মুমিনুল। সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায় তার কাঁধে আচমকা চলে আসে নেতৃত্ব ভার। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ দিয়ে হয় শুরু। দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হার।
চ্যালেঞ্জ নিলেন মুমিনুল। কিন্তু বারবার খেয়েছেন ধাক্কা। কখনও কখনও সাফল্যে উদ্ভাসিত করেছেন। নিউ জিল্যান্ডের মতো প্রতিকূল কন্ডিশনে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন। কিন্তু সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পাল্লা যেখানে ভারি, সেখানে ওঠে নানাবিধ প্রশ্ন। সামর্থ্যের পাশে পড়ে প্রশ্নবোধক চিহ্ন। সঙ্গে যোগ হয়েছে অপেশাদারিত্ব আচরণ! দলকে বাঁচাতে উদ্ভট সব ব্যাখ্যা।
এখন হাসছে না ব্যাটও। শেষ ১০ ইনিংসে তার রান মাত্র ৭৪। ৮ ইনিংসেই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। তিনটিতেই মেরেছেন ডাক। রান না পাওয়ায় বেশ সমালোচিত হচ্ছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সঙ্গে যোগ করছে নেতৃত্বগুণের ঘাটতিও।
‘সো ফার মুমিনুলের অধিনায়কত্ব নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। সমস্যাটা হচ্ছে ওর ব্যাটিং নিয়ে, ও রান পাচ্ছে না। এটা তো চিন্তার বিষয়। একজন অধিনায়ক যখন রান করে না, তখন ওর কী মানসিক চাপটা পড়ে তা চিন্তা করেন। তাই আমরা এখন শুধু আশা করতে পারি যে ও তাড়াতাড়ি রানে ফিরুক'-এভাবেই বলেছেন নাজমুল।
অধিনায়ক হওয়ার আগে মুমিনুলের ব্যাটিং গড় ছিল ৬৭ ইনিংসে ৪১.৪৮। অধিনায়ক হওয়ার পর সেটি ৩১ ইনিংসে ২৯.৪২ গড়ে গিয়ে ঠেকেছে। তার ৫৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে মোট রান ৩ হাজার ৫২৫। অধিনায়ক হওয়ার পর রান করেছেন ৯১২। মোট ১১টি সেঞ্চুরিতে অধিনায়ক হওয়ার পর পেয়েছেন মাত্র ৩টি। এই সময়ে ডাক মেরেছেন ছয়বার।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শ্রীলঙ্কা সিরিজে ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টি উঠে আরেকবার। সব বার বিসিবি সভাপতি বিষয়টা উড়িয়ে দিলেও এবার বলছেন মুমিনুলের সঙ্গে লম্বা আলাপ করবেন।