বিদায়ের মঞ্চ প্রস্তুত ছিল বলেই আর্শার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ২৪ হাজার দর্শক উপস্থিত তার জন্য। টেনিসের মহানায়িকা ফুলস্টপ দেবেন বলেই তো কতো আয়োজন। গ্যালারিতে ‘GOAT’ লিখা প্ল্যাকার্ড। ২৭ বছর আগে এই মঞ্চে যে চুলে তিনি হাজির হয়েছিলেন এক ভক্ত সেই স্টাইলেই উপস্থিত। গ্যালারিতে বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামস। সমর্থকরা পুরো ম্যাচজুড়ে চিৎকার, চেঁচামেচি।
ইউএস ওপেনে সেরেনা উইলিয়ামসের এই আনন্দময় পথচলা থেমে গেল তৃতীয় রাউন্ডে। শুক্রবার সেরেনাকে ৭-৫, ৬-৭ (৪), ৬-১ গেমে হারান অস্ট্রেলিয়ার আয়লা তমইয়ানোভিচ।
সেরেনা ম্যাচ হারলেন শেষবারের মতো। আর তাতেই বেজে গেল বিদায়ঘণ্টা। এই মাসেই ৪১ এ পা রাখবেন টেনিসের মহারাণী। ২৭ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ২৩টি মেজর সিঙ্গেল শিরোপা জিতেছেন। ডাবলস জিতেছেন ১৪টি। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ছোট-বড় সিঙ্গেল শিরোপা মোট ৭৩টি।
কল্পনা করা যায়? কল্পনাকে হার মানালেও সেরেনা কোর্টে নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। নারী টেনিসের সজ্ঞাকে পাল্টে দিয়ে নতুন করে লিখেছেন ইতিহাস। পেয়েছেন পুরুষ খেলোয়াড়দের সম্মান, সমীহ।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৯৫ সালে টেনিসে নিজের প্রথম পেশাদার টুর্নামেন্ট খেলেন সেরেনা। টেনিসের নম্বর ওয়ান এই খেলোয়াড় টানা ৩১৯ সপ্তাহ র্যাংকিংয়ে এক নম্বর থেকেছেন। নামের পাশে আছে চারটি অলিম্পিক মেডেলও।
সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে জয়ের অনুপাত ৮৪.৬ শতাংশ। একক প্রতিযোগিতায় মোট ম্যাচ জিতেছেন ৮৫৮টি। আয়ের দিক থেকে সেরেনা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিবিসির দাবি, ৯৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন টেনিসের শিরোপা জিতেই।
তবে বিদায়বেলায় একটি আক্ষেপ তার থাকতেও পারে। সর্বকালের রেকর্ড গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী অস্ট্রেলিয়ান মার্গারেট কোর্টের চেয়ে মাত্র একটি ট্রফি পেছনে সেরেনা। তাকে ছুঁতে না পেরেই সেরেনা বিদায় নিলেন চোখে জলে।
অবসরের ঘোষণা প্রতিযোগিতা শুরুর আগে দিলেও সেরেনা বিদায় বেলায় এক রহস্যময় বক্তব্য দিয়েছেন,‘পরিষ্কারভাবেই ফুটে উঠেছে যে, আমার এখনও সামর্থ্য আছে। আমার উচিত হবে এ বছরের শেষে নতুন করে আবার শুরু হবে। আমার মনে হয় না (কোর্টে ফিরব)… তবে, কে জানে! এখনই কিছু ভাবছি না। আমার তো অস্ট্রেলিয়াকে ভালো লাগে সবসময়ই!’
মহাতারকাদের জীবন বরাবরই দুর্বোধ্য। আগামী বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া ওপেনে সেরেনাকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।