বিশ্বকাপের ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন।
৭-০ গোলে কোস্টারিকাকে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপে স্পেনের দুর্দান্ত শুরু হলো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্পেনের এটি সবচেয়ে বড় জয়। জোড়া গোল করেন ফেরান টরেস। ১টি করে গোল করেন ডানি ওলমো, মার্কো অ্যাসেনসিও, গাভি, কার্লোস সোলার ও আলভেরো মোরাতা। পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়ে খেলছে স্পেন। ৮১ শতাংশ বল ছিল তাদের পায়ে, ১৬টি শটের ৭টিই গোল। অন্যদিকে ১টি শটও নিতে পারেন কোস্টারিকা।
মোরাতার গোল
অবশেষে গোলের দেখা পেলেন মোরাতা। যোগ করা সময়ের ২ মিনিটে ওলমোর সহায়তায় গোল করেন মোরাতা। ৭-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
সোলারের গোলে হাফডজন
বাঁ দিক থেকে উলিয়ামস শট নিলে সামনে এসে রুখে দেন নাভাস। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। ডি বক্সে দৌড়ে এসে ৯০ মিনিটে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন সোলার। ৬-০ গোলে এগিয়ে স্পেন।
ওলমো, অ্যাসেনসিও, টরেসের সঙ্গে যোগ দিলেন গাবি
এর আগের শট নাভাস রুখে দিয়েছিলেন। কিন্তু বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বাঁ দিক থেকে মোরাতা বল ডি বক্সে আলতো শটে তুলে দেন। গাবির শট ডান পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। নাভাস কিংবা কোস্টারিকার ডিফেন্ডাররা কেউই বুঝতে পারেননি।
টরেসের জোড়া গোল, স্পেনের এক হালি
৫৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পান টরেস। এর আগে প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল দেন এই স্ট্রাইকার। ৪-০ গোলে এগিয়ে স্পেন। গাবির কাটব্যাক খুঁজে নেয় টরেসকে। কোস্টারিকার ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে টরেস খুব কাছে থেকে গোলে শট নেন। খুব কাছে থাকা নাভাদের কিছু করার ছিল না। জাতীয় দলের জার্সিতে টরেসের এটি ১৫তম গোল।
প্রথমার্ধে স্পেনের দ্রুততম তিন গোলের রেকর্ড
রেকর্ড গড়ে প্রথমার্ধ শেষ করেছে স্পেন। কোস্টারিকার বিপক্ষে ৩-০ গোলে এগিয়ে আছে দলটি। ১৯৩৪ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে ৩ গোল দেয় স্পেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচের পর এই প্রথম কোনো দল আধঘণ্টার মধ্যে দুই গোল দেয়। ১১ মিনিটে প্রথম গোলটি আসে ওলমোর পা থেকে। অ্যাসেনসিও ব্যবধান দিগুণ করেন ১০ মিনিট পরেই। অ্যাসেনসিওর গোলে ১০ মিনিট না যেতেই এবার পেনাল্টি থেকে এগিয়ে দেন টরেস। প্রথমার্ধে ১টি আক্রমণও করতে পারেনি কোস্টারিকা। ৮৩ শতাংশ বল নিজেদের পায়ে রাখার পাশাপাশি স্পেন আক্রমণ করে ৬বার।
৩০ মিনিটে কোস্টারিকার জালে স্পেনের তিন গোল
৩০ মিনিটে কোস্টারিকার জালে স্পেনের তিন গোল। তৃতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে। ডি বক্সে ২৯ মিনিটে দুয়ার্তে ফাউল করেন আলবাকে। পেনাল্টি পায় স্পেন। টরেস বাঁ দিকে নিচু শটে ফাঁকি দেন নাভাসকে। কোটারিকার তারকা গোলরক্ষক ডান দিকে ঝাঁপ দেন। ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
অ্যাসেনসিওর গোল
ওলমোর পর অ্যাসেনসিওর গোল। ২১ মিনিটে ২-০ গোলে এগিয়ে স্পেন। প্রথম গোলের ১০ মিনিট পরেই আবার স্পেনের লিড। আলবার বাম দিক থেকে নেওয়া ক্রস থেকে নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান অ্যাসেনসিও।
১১ মিনিটে ওলমোর গোল
দানি ওলমোর করা ১১ মিনিটে দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে স্পেন। ডি বক্সের বাইরে থেকে আলতো করে তুলে দেন গাবি। দারুণ দক্ষতায় বল নিজের দখলে নেন ওলমো। একটু সামনে গিয়ে আলতো শটে কোস্টারিকার গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন ওলমো। এর আগে নিশ্চিত গোল মিস করেছেন, এবার উল্লাসে ভাসিয়েছেন দলকে। ২০০২ বিশ্বকাপ থেকে এই প্রথম ১১ মিনিটের মধ্যে গোলের দেখা পায় স্পেন।
শুরুতেই স্পেনের বড় ভুল
সামনে শুধু গোলরক্ষক। একটু দেখে শুনে শট নিতে পারলেই ৫ মিনিটে এগিয়ে যেতো স্পেন। কিন্তু ওলমোর শট বারের বাইরে দিয়ে যায়। গোল পোস্টের ৪০ গজ দূর থেকে বাম দিক দিয়ে অসাধারণ ক্রস করেন পেদ্রি, কিন্তু ওলমো কাজে লাগাতে পারেননি। ৫ মিনিটে সহজ সুযোগ হাতাছাড়া হয়।
টিকিটাকার জয়গান?
২০০৮ থেকে ২০১২; স্পেনের টিকিটাকাময় সময়টা ঠিক জাদুকরীই না ছিল। ২০০৮ তারা সালে ইউরো জিতলো। তার দুই বছর পর ২০১০ বিশ্বকাপে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হলো। তার দুই বছর পর ২০১২ সালে আবার ইউরো জিতলো। এরপর অবশ্য সমটা ভালো যায়নি তাদের। ২০১৪ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয় তারা। আর ২০১৮ বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতেই থামে তাদের যাত্রা।এরপর অবশ্য তারা ২০২০ সালে ইউরোর সেমিফাইনাল খেলেছিল। কিন্তু এটা বাদ দিলে স্পেনের ঝুলিতে গেল ১০ বছর ধরে শুধু ব্যর্থতাই ধরা দিয়েছে। তবে এবার তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে বিশ্বকাপে আরও একবার ভাগ্য নির্ধারণে জন্য মাঠে নামছে স্পেন।
কোস্টারিকা কেমন করবে?
কোস্টারিকার বিপক্ষে অবশ্য স্পেনের রেকর্ড ভালো। আগের তিনবারের মুখোমুখিতে দুইবারই জিতেছে স্পেন। তিনটি ম্যাচে স্পেন গোল দিয়েছে ৯টি। এর আগে বিশ্বকাপে পাঁচবার খেলেছে কোস্টারিকা। মাঝে ২০১০ সালে টিকিটই পায়নি। তবে ২০১৪ বিশ্বকাপে ফিরেই তারা কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল। অবশ্য ২০১৮ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল তারা। এবার বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে নাইজেরিয়াকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। এছাড়া সবশেষ ১৩ ম্যাচে তারা হেরেছে মাত্র একটিতে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আজ তারা স্পেনের মুখোমুখি হবে।