খেলাধুলা

১৯৭৪: নেদারল্যান্ডসের চমকে দেওয়া ‘টোটাল ফুটবল’ উপহার

আয়োজক: পশ্চিম জার্মানি, ভেন্যু: ৯, দল: ১৬, ফাইনাল: নেদারল্যান্ডস ও পশ্চিম জার্মানি, জয়ী: পশ্চিম জার্মানি (২-১), ইতিহাস: নতুন করে তৈরি করা হয় ট্রফি। আসরে চিলির কার্লোস কাসজেলি ফুটবল ইতিহাসের প্রথম লাল কার্ড দেখেন

জুলে রিমে ট্রফির অধ্যায়টা আগের আসরেই শেষ করে দিয়েছে ব্রাজিল। তিন বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে চিরতরে নিজেদের করে নেয় ট্রফি। তাই বাধ্য হয়েই নতুন করে তৈরি হলো ফিফা বিশ্বকাপ। আর জানিয়ে দেওয়া হলো তিন বার কেন, একশ বার জিতলেও ট্রফিটি দেওয়া হবে না কাউকেই। নতুন আঙ্গিকে, নতুন নিয়মের আসরটি আয়োজক হতে আগ্রহী ছিল পশ্চিম জার্মানি ও স্পেন। ভোটের মাধ্যমে পশ্চিম জার্মানিকেই বেছে নেয় ফিফার ১৪০টি দেশ।

বাছাই পর্বে অংশ নেয় ৯৮টি দল। মোট ২২২টি ম্যাচের পর বেছে নেওয়া হয় ১৬টি দল। এবারও ইউরোপ থেকে সুযোগ পায় ৯টি দল -পশ্চিম জার্মানি, পূর্ব জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, যুগোশ্লাভিয়া, সুইডেন, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, স্কটল্যান্ড ও ইতালি। আর ল্যাতিন আমেরিকা থেকে ৪টি দল -ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও চিলি সুযোগ পায়। কনকাকাফ  অঞ্চল থেকে হাইতি, আফ্রিকা থেকে জায়ার এবং ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে অস্ট্রেলিয়া অংশ নেয় দশম বিশ্বকাপে।

সে বিশ্বকাপে মোট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ৩৮টি। পশ্চিম জার্মানির ৯টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো। আগের আসরগুলোর মতোই ১৬টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। তবে এ আসর থেকে বাদ যায় কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল। চার গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলকে নিয়ে আর দুটি গ্রুপ করা হয়। যার নাম দেওয়া হয় দ্বিতীয় রাউন্ড। আর এ দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল খেলে ফাইনাল। আর রানার্স আপ দলদু’টি মুখোমুখি হয় তৃতীয় হওয়ার লড়াইয়ে।

তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের শুরুটা এ আসরে ভালো হয়নি। যুগোস্লাভিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেই ড্র। প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে জায়ারকে ৩-০ গোলে হারিয়ে গোল ব্যবধানে স্কটিশদের হটিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড খেলে দলটি। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডের শুরুটা খারাপ করেনি সেলেকাওরা। কিন্তু জোহান ক্রুয়েফের নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি দলটি।

টুর্নামেন্টে দাপটের সঙ্গেই খেলে নেদারল্যান্ডস। এ আসরে নতুন ধরণের ‘টোটাল ফুটবল’ উপহার দেয় তারা। দর্শকরাও বেশ উপভোগ করেন তাদের খেলা। তবে শেষটা তাদের ভালো হয়নি। সে আসরে দারুণ চমক দেখিয়েছিল পোল্যান্ড। প্রথম রাউন্ডের তিনটি ম্যাচেই জয় পায়। দ্বিতীয় রাউন্ডেও প্রথম দু’টি ম্যাচে জয়ের পর পশ্চিম জার্মানির কাছে লড়াই করে ০-১ গোলে হেরে যায়। তবে তৃতীয় হয়েই আসর শেষ করে তারা।

দ্বিতীয় রাউন্ডের দুই গ্রুপের দুই চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস ও পশ্চিম জার্মানি মুখোমুখি হয়। ম্যাচের ২ মিনিটেই জোহান নিশকিন্সের গোলে এগিয়ে যায় ডাচরা। কিন্তু এরপরই জেগে ওঠে ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ারের জার্মানি। পল ব্রেটনার ও গার্ড মুলারের গোলে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। জার্মানদের জমাট ডিফেন্সে হার মানে টোটাল ফুটবলের দেশ।

দশম বিশ্বকাপে মোট গোল হয় ৯৭টি। পোল্যান্ডের জেগস লাতো ৭টি গোল দিয়ে হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। এ আসরে চিলির কার্লোস কাসজেলি ফুটবল ইতিহাসের প্রথম লাল কার্ডটি দেখেন।

১৯৭০: লাল কার্ড ও হলুদ কার্ডের প্রচলন শুরু