নামটা চিরচেনা। কিন্তু পরিচয় একদমই নতুন। সিইও। ডেস্ক নেমপ্লেটে, সাকিব আল হাসানের নিচে লিখা সিইও (গালফ ওয়েল বাংলাদেশ লিমিটেড)। গালফ ওয়েল বাংলাদেশ একদিনের জন্য দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সুপারস্টারকে বসিয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার আসনে।
সাত সকালেই নিজের অফিসে হাজির সাকিব। নিত্য দিনের বাইরে গিয়ে সামলালেন বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে ক্রিকেট তো তার মূল পরিচয়। সেই পরিচয়ের বাইরে যেতে পারলেন না সাকিব। শুক্রবার থেকে শুরুর অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে কথা বললেন। যা বললেন তাতে স্রেফ কাঠগড়ায় বিপিএলের আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
সাত দল নিয়ে বিপিএল মাঠে গড়াচ্ছে। অথচ আয়োজনে হ-য-ব-র-ল। আধুনিক ক্রিকেট ডিআরএস ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। অথচ বিপিএল শুরুই হচ্ছে ডিআরএস ছাড়া। জানা গেছে, এখনো বিপিএলের এগারতম আসরের স্পন্সরও পায়নি আয়োজকরা। এছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও পেশাদারিত্ব আনতে পারেনি। একাধিক দলের ক্রিকেটাররা এখনও পায়নি জার্সির দেখা। একেক ক্রিকেটার একেক জার্সি পরে অনুশীলন সারছেন।
আবার বিপিএল দশ আসর কাটিয়ে দিলেও এখনও প্রত্যাশিত বাণিজ্যিক রূপ দিতে পারেনি। এজন্য একেক মৌসুমে একেক ফ্র্যাঞ্চাইজিও দেখা যায়। বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হাওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদের জন্য পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা যায় না।
বিপিএলের এসব অসঙ্গতি দীর্ঘ দিনের। এসবের ভেতরেই বিপিএল খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। খেলছেন সাকিবও, যিনি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ফেরি করে বেড়ান। তার দৃঢ় বিশ্বাস, দায়িত্ব পেলে দুই মাসের ভেতরে বিপিএলের সব ঠিক করে দেবেন। সাকিব বলেছেন, ‘বিপিএলের সিইও হলে আমার বেশিদিন লাগবে না। আমার ধারণা এক থেকে দুই মাস লাগবে সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। পুরো সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে আবার ড্রাফট হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে। আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’
ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সেখানে বিপিএলের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেন। ডিআরএস নিয়ে সরাসরি বোর্ডের দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, ‘বাজেট সংকট সম্ভবত (হাসি)। সদিচ্ছা থাকলে থেমে থাকার কোনো কিছু দেখি না। সদিচ্ছা থাকলে আমি তো কোনো কারণ দেখি না ডিআরএস থাকবে না, তিন মাস আগে ড্রাফট কিংবা অকশন কেনো হবে না? টিমগুলো দুই মাস আগে থেকে কেনো ঠিক হবে না?’
বাণিজ্যিকভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা লাভবান হতে পারে না। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল প্রোফিট শেয়ারিং করেন না। প্রত্যাশিত বাণিজ্যিক রূপ দিতে না পারাকে সাংগঠনিক ব্যর্থতা বলে মনে করেন সাকিব, ‘বাজেট ক্রিয়েট করতে পারেনি। ভ্যালু অ্যাড করতে পারেনি। এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বল না পেলে কিছু একটা দিয়ে বল বানিয়ে ক্রিকেট খেলছে। এমন তো না জনপ্রিয়তা নেই। সবার পছন্দের খেলার বাজার থাকবে না বিশ্বাস করি না। দুঃখজনক। মার্কেটিং জায়গা থেকে এটা ব্যর্থতা।’