খেলাধুলা

দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার অপেক্ষায় এশিয়া কাপের ‘চমক’ তামিম 

ইমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনালের মঞ্চ। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গী তানজিদ হাসান তামিম। নাঈমের সঙ্গে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তামিম দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। 

শুরুতে বাঁহাতি এই ব্যাটার ছিলেন শান্ত, প্রথম ৭ বলে করেন মাত্র ১ রান। এক পর্যায়ে তামিমের রানের সঙ্গে বলের পার্থক্য কমে যায়। পাওয়ার প্লের সুবিধা পুরোটা আদায় করে নিয়েছিলেন এই তরুণ তুর্কি। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে আসে ৫৬ বলে ৫১ রান। 

শুধু সেমিফাইনাল নয়, পুরো ইমার্জিং এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কায় তামিমের ব্যাট দ্যুতি ছড়িয়েছে । ৪ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই আসে ফিফটি। সর্বোচ্চ ৬৮। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (১৭৯)। ব্যাটিং করেছেন ১১৬.৯৯ স্ট্রাইকরেটে। 

২০২০ যুব বিশ্বকাপ থেকে আলো ছড়ানো তামিম ইমার্জিং এশিয়াতে দুর্দান্ত খেলে এবার ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। তাকে নেওয়া হয়েছে এবার বড়দের এশিয়া কাপে। 

শনিবার (১২ আগস্ট) তামিমকে রেখে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল চোটে থাকায় এশিয়া কাপের আগে জুনিয়র তামিমের দরজা খুলে যায়। যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারকে নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী তিন সদস্যের নির্বাচক প্যানেল।

মিনাহাজুল আবেদীন তামিমকে নিয়ে বলেছেন, ‘তানজিদ তামিমের (বিষয়ে) আমরা ন্যাশনাল সিলেকশন প্যানেল যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। ওকে এইচপিতে অনেকদিন নার্সিং করা হয়েছে। লাস্ট ইমার্জিং কাপে যথেষ্ট পারফর্ম করেছে। আশা করছি আমাদের জন্য, আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।’ 

ইমার্জিং এশিয়া কাপ ছাড়াও বিসিবির হাই পারফরম্যান্স টিমে থাকা তামিম ধারাবাহিকভাবে ঘরোয়াতেও রান করেছেন। চলতি বছর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তামিম ১১ ম্যাচে ৪৭৪ রান করেন। সেঞ্চুরি ২টি ও ফিফটি ১টি। স্ট্রাইকরেট ৯৩.৩০। 

লিস্ট ‘এ’তে ৪৬ ম্যাচে ১২৭১ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। ফিফটি ৭টি, সেঞ্চুরি ৩টি। গড় ২৮.৮৮। যুব ওয়ানডেতে ৩৪ ম্যাচে ১০১৮ রান করেন তামিম। সেঞ্চুরি ১টি ও ফিফটি ৮টি।  স্ট্রাইকরেট ১০২.৮২। আর যুব বিশ্বকাপ ৬ ম্যাচে আসে ১৬৬ রান।  ফিফটি করেন ১টি। সর্বোচ্চ ৮০ রান।  স্ট্রাইকরেট ছিল ১০১।  

তামিমের ব‌্যাটিংয়ের মূল শক্তি, ইনিংসের শুরু থেকে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারেন। যুব বিশ্বকাপ থেকে ঘরোয়া-আন্তর্জাতিক (বয়সভিত্তিক) প্রায় টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাটিং করেছেন একশর উপর স্ট্রাইকরেটে। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা আদায় করে বাঁহাতি ব‌্যাটসম‌্যান যদি আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেন, আখেরে লাভ হবে বাংলাদেশেরই।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের ট্রফি বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় মিরপুরে রাখা হয়েছিল ক্রিকেটারদের ফটোসেশনের জন‌্য। তামিমও ছবি তুলেছিলেন আকর্ষণীয় সেই ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে শেয়ার করে ক‌্যাপশন দিয়েছিলেন, ‘স্বপ্ন একদিন সত‌্যি হবে ইনশাআল্লাহ।’ নিজের সেই স্বপ্ন পূরণের পথে একধাপ এগিয়ে গেলেন তামিম। এশিয়া কাপে ভালো খেললে মিলবে বিশ্বকাপেরও সুযোগ।