২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর জখম হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ অগাস্ট মারা যান আইভি রহমান। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। প্রয়াত মায়ের চিকিৎসা করাতে না পেরে এখনও আক্ষেপ করেন তার একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন, বর্তমানে যিনি কিশোরগঞ্জ-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। মায়ের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার সকালে কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন নাজমুল হাসান। সন্ধ্যার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেদিনের নৃশংস ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।
‘আম্মা পড়ে আছে। কেউ এগিয়ে আসার মতো নেই। গাড়িতে পড়ে আছে। হাসপাতালে পড়ে আছে, কিন্তু চিকিৎসা করাতে পারছি না। এটা কোনোদিন হয়। এটা কেউ কোনোদিন চিন্তা করতে পারে। মানে সরকারি হাসপাতালে, ঢাকা মেডিকেল কলেজে তো ডাক্তারের অভাব নাই। কিন্তু আমি ডাক্তার পাবো না। ওষুধের দোকানের অভাব নাই। কিন্তু ওষুধ পাই না…।’ – কথা শেষ করতে পারেন না নাজমুল হাসান।
মায়ের খুব কাছের ছিলেন নাজমুল হাসান। ছোটবেলায় আইভি রহমান চাইতেন ছেলে যেন ডাক্তার হয়। কিন্তু নাজমুল হাসান কখনোই ডাক্তার হতে চাইতেন না। কিন্তু বড় হয়ে ফার্মাসিউটিক্যাল লাইনে চলে আসায় খুশি হয়েছিলেন আইভি রহমান। নিজেদের পারিবারিক আনন্দের কথা ভাগাভাগি করতে গিয়ে স্মৃতিকারত হয়ে পড়েন নাজমুল হাসান।
‘আম্মা ফার্মাসিউটিক্যাল লাইনটাকে বেশি পছন্দ করতেন। কারণ, আমার আম্মার সবসময় শখ ছিল আমি ডাক্তার হবো। আর আমি ডাক্তার হবো-ই না। ছোটবেলা থেকেই বলেছি আমি ডাক্তার হবোই না, আর আমার আম্মার শখ ছিল আমি ডাক্তার হই। আরেকটা ছিল আমি বিদেশ যাবোই না। আমার আত্মীয়-স্বজন যারা সবাই বিদেশে পড়াশোনা করে। আমি কোনোদিন যাই-ই নাই। আমি বলছি বিদেশে যাবো না।’
মায়ের প্রশংসা করে নাজমুল হাসান আরেও বলেন, ‘আম্মা মানুষদের খুব পছন্দ করতেন। বাসায় মানুষজন আসতো অনেক, বিপদে পড়লেই আসতো। এর মধ্যে প্রচুর অসুস্থ রোগী আসতো; বিশেষ করে মহিলাদের যদি কোনো সমস্যা থাকতো। এগুলো করতে উনি খুব পছন্দ করতেন। এজন্য কারও সাজেশন তো লাগবে। আগে ছিলেন প্রফেসর ওয়ালিউল্লাহ সাহেব। উনার কাছ থেকে আগে জানতো কিন্তু ওয়েট করতে হতো। পরে আমার কাছ থেকে যখন-তখন জেনে নিতো। এজন্য এটা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে।’