যে শঙ্কা নিয়ে ইবাদত হোসেন উড়াল দিয়েছিলেন লন্ডনে, সেই শঙ্কা বাস্তবে রূপ নিল। ‘কেন যেন মনে হচ্ছে অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। আর অস্ত্রোপচার লাগলেই বিশ্বকাপ শেষ’ – নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলার রোমাঞ্চে থাকা পেসার ইবাদত হোসেন চাইছিলেন না তার পায়ে অস্ত্রোপচার হোক।
কিন্তু লন্ডনে চিকিৎসা করতে যাওয়া এই পেসারকে লম্বা সময়ের জন্য ফিট থাকতে অস্ত্রোপচার করানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এজন্য বুধবার তাকে ছুরি-কাচির নিচের যেতে হলো। তাতে বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সকালে লন্ডনের ক্রমওয়েল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে যান ইবাদত। সেখান থেকেই নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, 'জীবনে প্রথমবার অপারেশন টেবিলে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ ভরসা।' জানা গেছে, ইবাদতের পুনর্বাসনের জন্য কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগতে পারে। ফলে তার বিশ্বকাপ খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তার সঙ্গে থাকা বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও একই কথা বললেন,‘অস্ত্রোপচার করানো পর আমরা তার পুনর্বাসন পরিকল্পনা করবো। সময় লাগবে এতোটুকু বলা যাচ্ছে। হাতে যে সময় আছে তাতে (বিশ্বকাপ নিয়ে) কিছু করার নেই।’
গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁ পায়ে চোট পেয়েছিলেন ইবাদত। অ্যান্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (এসিএল) চোটে ভুগছেন। তবে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর জানানো হয়েছিল চোট গুরুতর নয়। এরপর চলছিল তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া।
তাকে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল। ধারনা করা হয়েছিল সুস্থ হয়ে ফিরবেন। কিন্তু পুনর্বাসনে ভালো ফিডব্যাক না দেওয়ায় তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে তাকে পাঠানো হয় লন্ডনে। এবার বিশ্বকাপ থেকেও ছিটকে গেলেন তিনি। যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা।
মাত্র ১২ ওয়ানডে খেলা ইবাদতের ক্যারিয়ার আগাচ্ছিল দারুণভাবে। ১১ ইনিংসে বল করে ২২টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তার অভিষেকের পর এই সংস্করণে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট তার।
এশিয়া কাপ খেলতে যাওয়ার আগে ইবাদতকে নিয়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, ‘ইবাদত আমাদের ইমপ্যাক্ট বোলারের একজন। আমাদের যে পাঁচ ফাস্ট বোলার আছে তাদের মধ্যে দ্রুততম সে। শেষ কয়েকটি সিরিজ ভালো খেলেছে। তাকে হারানো বিরাট ক্ষতি।’
অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কণ্ঠেও ছিল একই সুর, ‘দুর্ভাগ্য যে ইবাদত আমাদের দলের অংশ হতে পারছে না। ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।’