খেলাধুলা

অঘটন ঘটাতে পারে বাংলাদেশ, সতর্ক ভারত

‘অঘটন কেন হবে? ২০০৭ বিশ্বকাপেই তো বাংলাদেশ ভারতকে হারালো। ২০১৫ সালের পর নিজেদের মাঠে দুটি সিরিজ জিতেছে। শেষ দেখায়ও বাংলাদেশ জিতেছে। তাহলে কেন অঘটন হবে?’

–নিজের দশম বিশ্বকাপ কভার করতে আসা দেবাশিস দত্ত প্রশ্নটা শুনে ক্ষেপে উঠলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উত্থান নিজ চোখে দেখেছেন। মিরপুরেও ঢুঁ মারা হয়েছে কয়েকবার। তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের খোঁজ-খবর রেখেছেন বেশ ভালোভাবেই।

পুনেতে বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারায় তাহলে কি অঘটন হবে? সেই প্রশ্ন উঠছে গত কিছুদিনে বিশ্বকাপে ঘটা নানা ঘটনার কারণে। যেখানে আফগানিস্তান উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। নেদারল্যান্ডস হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এবার কী বাংলাদেশের পালা? র‌্যাকিংয়ে এই দুই দলের ওপরে রয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। তাই বাংলাদেশকে নিয়েই যত আলোচনা। পুনেতে যাদের প্রতিপক্ষ তিন ম্যাচে তিন জয় পাওয়া ভারত।

যদিও বাংলাদেশ সেই ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে দুটি সিরিজে দুটিতেই জয় পেয়েছে ২-১ ব্যবধানে। সবশেষ এশিয়া কাপের মঞ্চে কলম্বোতে ভারতকে হারিয়েছে। শেষ চার ম্যাচে দুই দলের সমীকরণ যেখানে ৩-১ সেখানে বাংলাদেশ যদি পুনেতে জয় পায়ও তাহলে কেন অঘটনা হবে?

এটাকে অঘটন বলা যাবে না, কিন্তু বলা হচ্ছে। কারণ, নিজেদের মাঠে পরাক্রমশালী ভারত আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। সেখানে বাংলাদেশ শিবিরে উল্টো চিত্র। ইংল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশকে গোণায় ধরা হচ্ছে না।

তবে বাংলাদেশ অঘটন ঘটাতে পারে সেই আলোচনা ভারতীয় শিবিরে হয়ে গেছে। পেস বোলিং কোচ প্রবীন মাব্রে সেই কথা বললেন ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে, ‘সত্যি বলতে আপনি যখন বিশ্বকাপে খেলবেন তখন প্রতিটি দলই আপনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।  আমাদের দিক থেকে বলবো, যে কোনো দলই (চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে) এবং আমরা কোনো দলকেই হালকাভাবে নেই না। এটাই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। আমরা আলোচনা করেছি এটা (অঘটন) হতে পারে। দেখুন আমরা একমাত্র দল যারা নয়টি ভিন্ন শহরে, নয়টি ভিন্ন দল, নয়টি ভিন্ন আবহাওয়ায় খেলছি। আমরা কেবল আমাদের প্রস্তুতিই গ্রহণ করতে পারি। আমরা এটার (অঘটনের) জন্য প্রস্তুত। হয়তো বাংলাদেশ, না হয় নেদারল্যান্ডস। আমরা প্রত্যেক দলকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

মাব্রেকে শেষ চার ম্যাচের পরিসংখ্যান মনে করিয়ে দিতে অবশ্য বাংলাদেশকে নিয়ে নিজেদের সতর্কাবস্থান জানাতে পিছু পা হননি। বাংলাদেশকে সমীহ করছে তারা। তবে প্রতিপক্ষের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের খেলায় পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ভারতের।

‘এটা একটা ম্যাচ। ঠিক না? আপনি এখানে আসলেই যা করতে এসেছেন তা হলো আপনার পরিকল্পনাগুলিকে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী কার্যকর করা। এটাই খেলা। ম্যাচটা কঠিন হতে যাচ্ছে বলতে দ্বিধা নেই। আমি যেমনটা আগে বলেছি, আমাদের জন্য প্রতিটি খেলা গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের জন্য প্রতিটি প্রতিপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেদিকেও তাকাচ্ছি না। আমি মনে করি যে আমরা এই ম্যাচটিতে কী অর্জন করতে চাচ্ছি তার উপর আমরা মনোযোগ দিতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা আছে, আমরা যদি আমাদের জিনিসগুলি কার্যকর করি তবে আমরা জিতব। শুধুমাত্র যে জিনিস সম্পর্কে কথা বলা হয় এবং আমরা দলে যে আলোচনা করেছি তা আসলে প্রতিপক্ষ ছাড়া আর কিছু নয়।’

নেদারল্যান্ড দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হারিয়েছিল। এবার ওয়ানডেতে হারিয়ে আনন্দ দ্বিগুণ করেছে। আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে নিজেদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য পেয়েছেন। বাংলাদেশ আগেও ভারতকে হারিয়েছে। কিন্তু দলের বর্তমান বাস্তবতায় ভারতকে যদি আসলেও হারিয়ে পুনেতে বিজয়ের পতাকা উড়াতে পারে তাহলে তা অঘটনের চেয়ে কম কিছু হবে না। সেই প্রত্যাশা ১৭ কোটির বাংলাদেশির।