খেলাধুলা

বকেয়া পারফরম্যান্স শোধের পালা

এমনিতে অনুপস্থিত কাউকে নিয়ে কথা বলতে একদমই আগ্রহ দেখান না চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নামটা যখন তামিম ইকবাল তখন আগ্রহ একেবারেই থাকার কথা না! কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটের সফলতম ব্যাটসম্যানকে ভুলে যাওয়া কিংবা এড়িয়ে যাওয়া কি খুব সহজেই সম্ভব? ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জহির খানকে উড়িয়ে মারা ছক্কা আজও বিশ্ব ক্রিকেটে আগ্রাসনের ট্রেডমার্ক হয়েই আছে।

এবারের বিশ্বকাপে তামিম নেই। আজ যখন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ তখন ঘুরে ফিরে তামিমের নাম আসছেই। কেননা আগের তিন ম্যাচের একটিতেও উদ্বোধনী জুটি ২০ পেরোয়নি। যে কোনো কোচের জন্যে তা উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞ তামিমের অভাব অনুভব করা অস্বাভাবিক নয় একদমই। কিন্তু কোচ তার নাম শুনেই আলোচনা এড়িয়ে যেতে চাইলেন, ‘তামিম ইকবাল এখানে নেই। তাই আমি বলতে পারব না, আমরা তার অভাববোধ করছি কি না।’

তামিমের নাম উঠুক আর না উঠুক, আজ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে হাথুরুসিংহে তার শিষ্যদের থেকে সেরা এবং পরিপূর্ণ পারফরম্যান্সের প্রত্যাশায় আছেন। যা অনুপস্থিত ছিল শেষ তিন ম্যাচে। তার মতে, বকেয়া পারফরম্যান্সের শোধ দেওয়ার এটাই সেরা সুযোগ, ‘এখানে আমাদের ব্যাটসম্যানদের থেকে বড় কিছুর প্রত্যাশা করতে হবে। একদম পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স। আমরা যখন একটি দল হয়ে খেলি, পারফর্ম করি তখন বড় দলগুলোকে হারাতে পারি। পূর্বেও সেটা করে দেখিয়েছি। ফিঙ্গার ক্রস। বকেয়া পারফরম্যান্স শোধ করার পালা।’

তবে ব্যাটসম্যানদের থেকে সেরা পারফরম্যান্স বের না হয়ে আসার অন্যতম কারণ হতে পারে তাদের নিজস্ব পজিশনে ব্যাটিংয়ে না পাঠানো। শেষ ছয় মাসে যে নিয়মিত ব্যাটিং করে আসা পজিশনে থিতু হতে পারছেন না তারা। যা পারফরম্যান্স বের না হয়ে আসার বড় কারণও হতে পারে।

তবে এই শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন হাথুরুসিংহে, ‘আমার মনে হয় না, দল অগোছালো আছে। আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারছি না এবং আমি জানি, ক্রিকেটাররা এর চেয়ে ভালো করতে চায়। যা বললাম, ব্যাটিংয়ে আমরা পরিপুর্ণ পারফরম্যান্স করতে পারিনি। কিছু ম্যাচে কিছু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স হয়েছে। তবে সম্মিলিত কিছু হয়নি। তাই আশা করি এই ম্যাচে… কারণ ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট খুব ভালো এবং আমরা আশা করছি তারা ব্যাটিংয়ে ভালো পারফর্ম করবে।’

এদিকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ এই ম্যাচে ভারতে হারাতে পারলে বিশ্বকাপ জমে ‘ক্ষীর’ হয়ে যাবে। কারণ এ সপ্তাহে আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে এবং নেদারল্যান্ডস দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। এবার বাংলাদেশের পালা? হাথুরুসিংহে বিশ্বাস করেন, বিশ্বকাপ উন্মুক্ত। যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। শতভাগ পারফর্ম করে সেই সুযোগটি নিতে হবে, ‘গত দুই সপ্তাহে যা হয়েছে, বিশ্বকাপ এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের ছয়টি ম্যাচ বাকি। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা ছয়টা ম্যাচ জিততে পারি। আগামীকালের (আজকের) ম্যাচের আগে এটাই আমাদের অনুপ্রেরণা।’

ভালো উইকেট ও প্রতিপক্ষের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের কথা ভেবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশে ষষ্ঠ একজন বোলার খেলানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান কোচ, ‘এ উইকেটে আদর্শ কম্বিনেশন হতে পারে, আপনার বোলিংয়ে বাড়তি একজনকে দরকার। কারণ, উইকেট বেশ ভালো হতে যাচ্ছে, আর ভারতও বেশ শক্তিশালী ব্যাটিং দল। ফলে এ দিকটি বিবেচনা করার কথা ভাবছি আমরা।’

ম্যাচের ফল কি হবে না হবে সেটা তো পরের বিষয়। এ ম্যাচে সাকিব খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়া থেকেই যাচ্ছে। পায়ের ঊরুর চোটে ভুগছেন সাকিব। যদিও একদিন আগে নেটে পুরোদমে ব্যাটিং করেছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। আজ সকালে গতকাল করা স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়ার পর তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে টিম ম্যানেজমেন্ট। সঙ্গে দেখা হবে বোলিংয়ে কোনো জড়তা আছে কিনা। সাকিব খেললে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি। কেননা দুই দলের শেষ মুখোমুখিতে জয় পাওয়া সেই ম্যাচে সাকিবই হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। ২২ গজে তার ব্যাট-বল আবার জ্বলে উঠলে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ হাসতে পারে পুনের মাঠে।