খেলাধুলা

অস্বস্তিকর ৬৯ মিনিট: নির্বিষ বোলিংয়ের সঙ্গে ঢিলেঢালা মনোভাব

এক রাতের ব্যবধানে নাজমুল হোসেন শান্তর মনোভাব পাল্টে গেল? আগের দিনে সিলেটে নিউ জিল্যান্ডকে আটকে রেখে লিড নেওয়ার প্রত্যাশায় প্রবল আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজানো তার। উদ্দীপ্ত অধিনায়কত্ব। লড়াইয়ের ঝাঁঝ। উইকেটের পেছনে বলয় তৈরি করে রান আটকানোর প্রানান্তকর চেষ্টা। উইকেটের চারপাশে দেয়াল তৈরি করে সিঙ্গেল-ডাবলসে বাধা দেওয়া। সীমানায় দৌড়বিদ রেখে বাউন্ডারি থামানো। সঙ্গে নিখুঁত ফিল্ডিং পজিশন তৈরি করে সুযোগ তৈরির চেষ্টা। 

ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট অধিনায়কত্ব করতে নেমে শান্ত নিজের সামর্থ্য দেখাচ্ছিলেন দারুণভাবে। মনোভাব ছিল স্পষ্ট, রান করতে চাও কষ্ট করে নাও। কিন্তু রাত পেরিয়ে নতুন সকাল হতেই শান্তর ইউ-টার্ন। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে যেন ব্যাটিং করলো বাংলাদেশ! নিউ জিল্যান্ডের লেজের দুই ব্যাটসম্যান যখন অনায়াসে ব্যাটিং করছিলেন তখন রান আটকাতে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছিলেন না অধিনায়ক। ৪৪ রানে পিছিয়ে থেকে দিন শুরু করা নিউ জিল্যান্ড বাংলাদেশের করা ৩১০ পেরিয়ে ৭ রানের লিড নেয়। শেষ ২ উইকেট হাতে রেখে ৫১ রান যোগ করে। 

বাংলাদেশের বোলিং শুরু থেকে ছিল নির্বিষ, ধারহীন। নতুন বলে স্পিনার কিংবা পেসাররা সাত সকালে কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি। কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি। সঙ্গে ফিল্ডিংয়ে ঢিলেঢালা মনোভাবে চাপে থাকা নিউ জিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষে হাসি ফুটিয়েছে। রৌদ্রজ্জ্বল সকালে ৬৯ মিনিট ব্যাটিং করেছে কিউইরা। সেঞ্চুরি পাওয়া উইলিয়ামসন শেষ বিকেলে আউট হয়ে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের রান পেরিয়ে কিছু রান পাওয়া হবে দারুণ কিছু। 

সাউদি, জেমিসন সেঞ্চুরিয়ানের প্রত্যাশা পূরণ করেন। তাইজুল, নাঈম, শরিফুলের ধারহীন বোলিংয়ে সাউদি, জেমিসন সহজেই রান তোলেন। সিঙ্গেল-ডাবলসের সঙ্গে পেয়েছেন বাউন্ডারি। বোলিং ভালো না হলেও ফিল্ডিং পজিশনের কারণে অনেক সময় ব্যাটসম্যানরা চাপে থাকেন। কিন্তু শান্তর আজকের ফিল্ডিং সাজানো ছিল আঁটসাঁট। ক্লোজ ইনে ফিল্ডার বলতে গেলে ছিলই না। স্লিপে কেবল ছিলেন শান্ত। মিড অফ ও মিড অন এবং লং অন ও লং অফের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে মুমিনুল জয় ফিল্ডিং করেছেন। মুশফিক দিনের শুরু থেকে মিড উইকেটে। এছাড়া কাভার, ডিপ এক্সট্রা কভারে ফিল্ডার রেখে আক্রমণ চালিয়েছেন শান্ত। যা কোনো কাজেই আসেনি স্বাগতিকদের। 

বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠা এই শেষ দুই জুটি টেকে ৬৯ মিনিট। নিয়মিত বোলারদের দিয়ে যখন কোনো কাজ হচ্ছিল না তখন মুমিনুলকে বোলিংয়ে অধিনায়ক সাফল্য পেয়েছেন। নিজের করা দ্বিতীয় ওভারে প্রথমে জেমিসনকে এলবিডব্লিউ করান বাঁহাতি স্পিনার। পরবর্তীতে একই ওভারে সাউদিকে বোল্ড করেন। আগের দিন গ্লেন ফিলিপসকেও ফিরিয়েছিলেন এই স্পিনার। ৩.৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৭ রানে তার শিকার ৩ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও। 

সকালে অস্বস্তিকর সময় কাটিয়ে প্রথম ইনিংসে ৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে না পারলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাবে। এখন তাদের পারফর্মের অপেক্ষা।