নিউ জিল্যান্ডকে আরেকটি টেস্টে হারানোর খুব কাছে বাংলাদেশ। শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শেষ দিনে নিউ জিল্যান্ডের ৩ উইকেট নিতে পারলে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক যুক্ত হবে।
২০২২ সালে বাংলাদেশ কিউইদের তাদের মাটিতেই হারিয়েছিল। মাউন্ট মঙ্গানুইতে বাংলাদেশ জিতেছিল ৮ উইকেটে। এবার ঘরের মাঠে একই সাফল্যের খোঁজে স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখার নায়ক ছিলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসেও এখন পর্যন্ত নিয়েছেন ৪ উইকেট। বল হাতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া এই স্পিনার শুক্রবার দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। সেখানে ম্যাচ নিয়ে নানা কথা বলেছেন। তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডিও-
জয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে বাংলাদেশ। এর আগে মাউন্ট মঙ্গানুইতেও জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ... তাইজুল ইসলাম: বড় দলকে হারানোর মজাই আলাদা। এখনও জিতি নাই, তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বড় দলকে হারালে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, দল বদলে যাওয়ার আভাস থাকে। পুরো সার্কেল (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ) যেন এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারি। কয়টা ম্যাচ জিতব বা জিতব না জানি না, তবে বাংলাদেশকে যেন ভালো কিছু দিতে পারি সেই চেষ্টা থাকবে।
সেজন্য কেমন টার্গেট করবেন? তাইজুল ইসলাম: টার্গেট তো মুখ দিয়ে বললাম আর হয়ে গেল এমন কিছু না। আছে… টার্গেট তো থাকে। আমরা যদি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৩-৪ বা ৫ এ আসতে পারি, এটা আমাদের জন্য বিশাল একটা প্রাপ্তি।
উইকেট যেমনটা প্রত্যাশিত ছিল তেমনই কী পেয়েছেন? তাইজুল ইসলাম: সকালেও উইকেট এত কঠিন মনে হচ্ছিল না। আমাদের বোলাররা অনেক দুর্দান্ত বোলিং করেছে। ওদের বড় ব্যাটসম্যানরা দ্রুত হারানোয় চাপে পড়েছে। বলব না উইকেট খুব খারাপ।
বিশ্বকাপে একটা বাজে সময় পেরিয়ে বাংলাদেশ এই টেস্টে মাঠে নেমেছে। একটু বলবেন দলের তখনকার আবহ আর বর্তমান পরিস্থিতি কেমন? তাইজুল ইসলাম: আবহের কথা বলতে পারব না যেহেতু বিশ্বকাপে আমি ছিলাম না। আমি যখন এসেছি, আমরা চেষ্টা করেছি এক হয়ে থাকতে। সবাই যেন সবাইকে বোঝে, চেনে। খারাপ না।
কেন উইলিয়ামসনের উইকেট দুইবার আপনি পেয়েছেন। পরিকল্পনা কি ছিল? তাইজুল ইসলাম: ৯ বছর ধরে খেলছি। ওদের (দলের) মধ্যে আস্থা ছিল হয়ত আমি কোনো সেটআপ করে আউট করতে পারব। হয়েছে।
আপনি লম্বা সময় ধরে খেলছেন এখন কি দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নিজের অংশগ্রহণ দেখছেন। কিভাবে দলের ছোট-বড় কাজে নিজেকে এগিয়ে দিচ্ছেন? কেউ এগিয়ে আসলে কি খুশি হচ্ছেন? তাইজুল ইসলাম: খুশি অখুশির কিছু নাই। অবশ্যই একজন খেলোয়াড় যখন ৮-১০-১২ বছর খেলে, অবশ্যই অভিজ্ঞতা থাকে। ক্রিকেটে এই অভিজ্ঞতা অনেক কাজে লাগে। অধিনায়ক কোচের উপর নির্ভর করে আমাকে কতটা প্রায়োরিটি দিচ্ছে। প্রায়োরিটি দিলে অবশ্যই চেষ্টা করবো সাহায্য করার। সবসময় আমার দরজা খোলা। যেকোনো দরকার হলে আমি করবো। প্রায়োরিটি পাই। অনেকে অনেক সময় বলে কি করা যায়। আমি পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করি।
শান্ত প্রথমবার অধিনায়কত্ব করছে। তাকে কেমন দেখলেন? তাইজুল ইসলাম: অধিনায়ক হিসেবে সে ভালো, অনেক সিদ্ধান্ত নেয়। যেখানে আটকে যায় আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার যারা আছে, মুশফিক ভাই আছে সৌরভ আছে এমনকি আমাকেও বলে। যেখানে আটকে যায় সেখানে আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করি। আর তার তো জ্ঞান আছেই। ৫-৬ বছর ধরে খেলছে, তার মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা আছে। আমার মনে হয় সে খারাপ না, ভালো আছে।
আপনি লম্বা সময় পরপর জাতীয় দলে আসেন। একটু বলবেন নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত রাখেন? তাইজুল ইসলাম: তেমন কোনো প্রস্তুতি আমি নিই না। প্রস্তুতি একটাই থাকে একটা জায়গায় বল করা। সেখানে কতটা ভ্যারিয়েশন মানিয়ে নিতে পারলাম সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
বোলিং আক্রমণে নিজেকে লিডার ভাবতে কেমন লাগে? তাইজুল ইসলাম: ভালো লাগে। বাট বুড়া বানায়ে দিয়েন না আবার।
সাকিব নেই। থাকলে এরকম পরিকল্পনা হয়। না থাকলে আরেকরকম। একটু বলবেন কিভাবে ওই বোঝাপোড়াটা হয়? তাইজুল ইসলাম: আরেকজনেরটা তো আমি করতে পারব না। আরেকজন আবার আমারটা করতে পারবে না। আমি আমার পরিকল্পনাতে থাকি। সাকিব ভাই থাকুক আর না থাকুক। আমার সাথে আরও স্পিনাররা আছে। গেম বাই গেম পরিকল্পনা করা হয়- কেউ উইকেট নিবে কেউ রান আটকে রাখবে। আমি রান আটকালে হয়তো মিরাজ বা নাঈম উইকেট পেত। কেউ থাকুক আর না থাকুক, আমরা ভালো খেলছি কি না এটাই জরুরি।