ঢাকার অদূরে নারায়াণগঞ্জে বাড়ি। তবুও পরিবারের মুখ দেখতে পারেননি। এখনো যে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নশিপের উদযাপন শেষ হয়নি। সব মিলিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বির সময়টা কাটছে মধুর ব্যস্ততায়।
মুঠোফোন জমে গেছে অভিনন্দন বার্তায়। সঙ্গে একের পর এক কল লেগেই আছে। এই তরুণ তুর্কি হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন, সামলাতে। তবু দাগ কাটছে না ভাবনায়। সামনেই আছে যে বিশ্বকাপ। এশিয়া কাপ জয়ের আনন্দে হারাতে চান না বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ।
রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত আলাপকালে রাব্বি জানিয়েছেন নিজের ক্রিকেট জীবনের গল্প-গাঁথা। পাঠকদের জন্য চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
এশিয়া কাপ জয় কেমন উপভোগ করছেন? রাব্বি: সব মিলিয়ে বলতে গেলে খুবই ভালো লাগছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা দিতেই বড় টুর্নামেন্টের ট্রফি এলো আপনার হাত ধরে… রাব্বি: আমার হাত ধরে এসেছে ঠিক আছে। কিন্তু এটার পেছনের অবদান আমাদের ম্যানেজমেন্টের, তারপরে আমাদের প্লেয়ার, যারা সেরা একাদশে ছিল, যারা বাইরে ছিল তারাও। মূলত আমরা টিম হিসেবে খেলেছি, এ জন্য এটা হয়েছে।
বিশ্বকাপের মাসখানেক আগে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন, টনিক হিসেবে কাজ করবে কি না? রাব্বি: অবশ্যই কনফিডেন্স দিচ্ছে এই চ্যাম্পিয়নশিপটা। আমাদের সব প্লেয়াররাই খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে আছে। আমরা সবাই খুব ভালো সময়ে আছি। ভালো একটা অনুপ্রেরণা কাজ করছে।
বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনাট কী? রাব্বি: ভাবনা বলতে, আমরা যে প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি, সেটার মধ্যে থাকতে চাই। ভালো অনুশীলনের সুযোগ দিচ্ছে আমাদের। এ সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপে আরও ভালো কিছু করতে চাই।
কিভাবে ক্রিকেটে আসা? রাব্বি: প্রথমত ক্রিকেটের ভেতরে আসার মূল হচ্ছে আমার বড় ভাই। তিনি ক্রিকেট প্লেয়ার ছিলেন। তার হাত ধরে আসা। বলতে গেলে সে আমাকে গাইড করেছে। তারপরে কোচদের অধীনে অনুশীলন করা। আমি নারায়ণগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমির স্টুডেন্ট।
যুব দলে কিভাবে ডাক পেয়েছেন… রাব্বি: আমরা প্রথমে বয়সভিত্তিকে ছিলাম, অনূর্ধ্ব-১৫তে। ওখানে নির্বাচিত হওয়ার পর একটা টুর্নামেন্ট (ইয়ুথ ক্রিকেট লিগ) হয়। ওখানে পারফর্ম করার পর এখানে (অনূর্ধ্ব) ডাক আসে। তারপরে স্কিল ক্যাম্প, ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্প করতে করতে এ পর্যায়ে।
ক্রিকেটে কাকে অনুসরণ করেন? রাব্বি: ফার্স্ট অব অল আমার আইডল সাকিব ভাই। আমি তাকেই ফলো করি।
আপনি বোলিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিং কেমন উপভোগ করেন? রাব্বি: আমার বোলিং করতে ভালো লাগে, ব্যাটিংটা একটু বেশি ভালো লাগে। যে জায়গায় ব্যাটিং করছি, সেটা আমার ফেবারিট একটা জায়গা। এই জায়গাতে আমি খুব উপভোগ করি। আমি ছোটবেলা থেকে বোলিং করি। আমি এটা নিয়ে কাজ করতেছি। সোহেল স্যার আছেন, তার কাছ থেকে ছোট থেকে বড় হওয়া। স্পিন কোচ হিসেবে আমরা তার আন্ডারে আছি। সবার সঙ্গে ব্যাটিং নিয়েও কাজ করা হচ্ছে।
অধিনায়কত্বে একটা চাপ থাকে। কীভাবে সামলান কেমন উপভোগ করেন? রাব্বি: এখানে চাপ থাকতে পারে। আমি এটা নিই না। শুধু সাধারণ একটা ক্রিকেট ম্যাচ, এটা ভাবি। এটার পেছনে বলব যে স্টুয়ার্ট ল স্যার খুব সাহায্য করছেন। আমার টিমের প্লেয়াররা আমার সিদ্ধান্তগুলো খুব সাদরে গ্রহন করছে। এ জন্য আমার কাজটা সহজ হয়ে গেছে।
কার অধিনায়কত্ব দেখে শেখেন? রাব্বি: সাকিব ভাইকে ফলো করি সব জায়গায়।
আপনারা কোচিং করছেন স্টুয়ার্ট লর পরীক্ষিত কোচ, ওয়াসিম জাফরের মতো দক্ষ ক্রিকেটারের অধীনে। এটা কি রকম কাজে দিয়েছে? রাব্বি: প্রথমত এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া যে, বোর্ড আমাদের এতো সুন্দর একটা সুযোগ করে দিয়েছি। এই রকম বিশ্বমানের কোচদের কাছ থেকে শিখতে পারা দারুণ কিছু। তারা আমাদের খুব ভালোভাবে শিখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে কঠিন সময়গুলো পার করব, মানসিকভাবে কি রকম থাকতে হবে। এগুলো নিয়ে কাজ করছে। এ ছাড়া টেকনিক, ব্যাটিংয়ের ছোটখাটো কিছু কাজ করছে।
সাবেক পেসার নাজমুল ইসলামও আপনাদের কোচ… রাব্বি: নাজমুল স্যার বলতে গেলে কঠিন পরিশ্রম করছে পেস ইউনিট নিয়ে। তার প্রমাণ পাচ্ছেন, আমাদের পেস বোলাররা খুব ভালো করছে।
বিশ্বমানের কোচিং প্যানেলে পেয়ে নিশ্চয় খুশি? রাব্বি: এরকম কোচিং প্যানেল পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তারা উঁচু মানের কোচ। তাদের কাছ থেকে টিপস নিতে পারলে অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারব।
খালেদ মাহমুদ সুজন আপনাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারকা কোচদের ছাড়া সুজনের সঙ্গে কোনো সেশন হয় আপনাদের? রাব্বি: জ্বি, প্রত্যেকটা সিরিজের পর সুজন স্যার আমাদের সঙ্গে বসেছেন। ভালো হোক, খারাপ হোক কথা বলেছেন। যদি খারাপ করি, তাহলে শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ভালো টিপস দিয়েছেন আমাদের।